ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বগুড়া-১ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৮
বগুড়া-১ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসন। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার একটি এলাকার নাম হাট ফুলতলা। বগুড়া শহর থেকে গাবতলী উপজেলা হয়ে সারিয়াকান্দি পৌঁছার আগেই হাট ফুলতলার অবস্থান।

এলাকাটির বর্তমান পরিস্থিতি অনুসারে বা এলাকাবাসীদের মতামতের ভিত্তিতে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটযুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দৃশ্যমান। নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে, ততই দেশের দুই প্রশান রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীদের এ লড়াইয়ের সম্ভাবনা গাঢ় থেকে গাঢ়তর হচ্ছে বলে জানা যায়।


  
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) নিয়ে এ আসনটি গঠিত। আসনটি বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান রয়েছেন। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হন। এর আগে এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির কাজী রফিকুল ইসলাম। তিনি কয়েক দফা এমপি নির্বাচিত হন।

তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বগুড়া-১ থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নানের সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. শোকরানা অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। এবার এ আসন থেকে বিএনপি মো. শোকরানা ও সাবেক সংসদ কাজী রফিকুল ইসলামকে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ থেকে এককভাবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয় বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানকে।
 
হাট ফুলতলা এলাকার স্থানীয় বাজারে তখন সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা। একটি চা-স্টলে চলছিল নির্বাচনী আলাপ-আলোচনার ঝড়। সেখানে কথা হয় চা-স্টলে বসে থাকা বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে। ভোটের কথা জানতে চাইতেই এ প্রতিবেদকের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকেন আমির আলী, জমির উদ্দিন, ইব্রাহিম হোসেনরা।

প্রথমে তারা ভোট নিয়ে কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। কিছুক্ষণ পর তারা একে একে তারা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কথা বলতে শুরু করেন। তবে কথা বলতে গিয়ে তারা বলেন, ‘কি বলবো আবার কার পক্ষে যায় তা নিয়েও চিন্তা করেন তারা’।

আমির আলী বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে এলাকায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম নেই। ভোটের সময় আসা মাত্র তিনি দলের মনোনয়ন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এখন শুনছি তিনি নাকি আবার ভোট করবেন’।

‘অথচ এই দীর্ঘ সময় দলের নেতাকর্মীরা মামলা হামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। এতোদিন তিনি তাদের কোনো খোঁজ-খবর রাখেননি। মামলা হামলার শিকার এসব নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নেন দলের আরেক এমপি প্রার্থী মো. শোকরানা। যাবতীয় খরচাদিও তিনি বহন করেন। তাহলে বিএনপির নেতাকর্মীরা কাকে ভোট দেবেন এখন আপনিই (প্রতিবেদক) বলুন। ’

এসময় জমির উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে কেউ কম না। দীর্ঘ সময় এলাকায় না থাকলেও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলামের গ্রহণযোগ্যতা একেবারে কম না। আবার মো. শোকরানাও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। ’

ইব্রাহিম হোসেন, জামাল উদ্দিন জানান, ‘বর্তমান এমপি আব্দুল মান্নান এ আসনে বিগত ১০ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। এখনো অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। দলকেও তিনি নানাভাবে সুসংগঠিত করেছেন। এছাড়া তিনি একজন দক্ষ রাজনীতিবিদও বটে। ’

বাংলানিউজকে এসব ভোটাররা জানান, এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান এমপি আব্দুল মান্নানকে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. শোকরানা ও সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলামকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এদিক থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল মান্নান অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তবে ভোটারের মনোভাব জানতে শেষমেষ বিএনপির প্রার্থী কে থাকেন? সে অবধি অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই যোগ করেন এসব সাধারণ ভোটারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৮
এমবিএইচ/এমএএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।