মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীর হলফনামা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় দেখা গেছে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪ প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রেমসাগর হাজরা।
প্রেমসাগর হাজরা ‘আনারস’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আরেক ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি আফজল হকের হিসাব বিবরণীতে দেখা গেছে তিনি অর্থ-সম্পদে অন্যান্য প্রার্থী থেকে এগিয়ে আছেন। তিনি ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে নগদ অর্থে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভানু লাল রায়। তিনি ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মিজানুর রব। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
হলফনামায় প্রার্থীদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও শ্রমিক লীগ নেতা প্রেমসাগর হাজরার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস। বাকি প্রার্থীদের মধ্যে আফজল হক এসএসসি, মিজানুর রব এসএসসি ও ভানুলাল রায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন।
স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির তথ্যে দেখা গেছে সবচেয়ে এগিয়ে আফজল হক। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৪ হাজার ৭ টাকা। তিনি তার হলফনামায় পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও নগদ ১০ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রীর কাছে নগদ ১৫ লাখ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
ব্যাংকে তার হিসাবে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭ টাকা রয়েছে। স্বর্ণ আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আফজলের আছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার। কৃষি ও অকৃষি জমি মিলিয়ে আফজল ও তার স্ত্রীর রয়েছে মোট ১১ দশমিক ৩১ একর জায়গা, যার মধ্যে একটি দালান ও একটি বাগান রয়েছে। আফজল হকের ব্যাংকে ঋণ আছে ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
আরেক প্রার্থী প্রেমসাগর হাজরা পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন কৃষিকাজ। তার হাতে নগদ আছে ২ লাখ টাকা ও ব্যাংকে নিজের নামে ৩ লাখ ৫০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে আছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কৃষিকাজ থেকে তার বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকে তার ওপর নির্ভরশীলদের রয়েছে আরও ৫ লাখ টাকা। যানবাহনের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। তার ওপর নির্ভরশীলদের একটি কার ও মোটরসাইকেল রয়েছে। প্রেমসাগরের স্ত্রীর ৩ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কারের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও আসবাবপত্র রয়েছে আড়াই লাখ টাকার।
প্রেমসাগরের নামে দুইটি ফৌজদারি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীতপ্রার্থী ভানু লাল রায়ের হাওর বিলাস ফিশারি নামে একটি মৎস্য খামার রয়েছে। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পাশাপাশি তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বাৎসরিক ১ লাখ ১১ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। ভানু লাল রায়ের নগদ অর্থ ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও যানবাহন আছে তার ৫৫ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পত্তি আছে ৪.৯ একর যার বর্তমান মূল্য ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র রয়েছে ৯০ হাজার টাকার। ভানু লাল রায় মোট সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ২৭ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩০ টাকা।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিজানুর রব একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন। মিজানুর রবের চাকরি থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা। তার কাছে নগদ অর্থ আছে ৪ লাখ ও ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ টাকা। এছাড়াও ১ লাখ টাকা মূল্যমানের ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্র ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আছে ১ লাখ টাকার। কৃষি বা অকৃষি জমি নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি। মিজানুর রবের মোট সম্পদের পরিমাণ ৭ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
বিবিবি/এএটি