ঢাকা: আসন্ন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা যাচাই করতে একটি নির্দেশনা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নির্দেশনা মোতাবেক মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি পাঠানো হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২ নভেম্বর উপ-নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১০ অক্টেবর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১১ অক্টোবর, আপিল ১২-১৪ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৭ অক্টোবর ও প্রতীক বরাদ্দ ১৮ অক্টোবর।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে- আদালত থেকে কোনো ব্যক্তি যদি ‘অপ্রকৃতিস্থ’ বলে ঘোষিত হন, তবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য-অযোগ্যতার বিধানে এমনটিই বলা হয়েছে সংবিধানেও। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা ১ ও ২ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং ২৫ বছর বয়স হলে সংসদের সদস্য নির্বাচিত হতে এবং সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন। এটিকে যোগ্যতা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
আবার এই যোগ্যতা থাকলেও অন্য কারণে একজন ব্যক্তি অযোগ্য হতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো উপযুক্ত আদালত থেকে তিনি অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হলে, দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে তা অযোগ্যতা হিসেবে গণ্য হবে। তবে পরবর্তীতে যদি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন কিংবা পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন, তবে অযোগ্য হবেন না।
কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড পেলে, কারাভোগের পর পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
এছাড়া ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীনে যেকোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকলে এবং প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে আসীন থাকলেও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হতে হবে।
সাবেক সংসদ সদস্য মো. হাসিবুর রহমান স্বপন গত ২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। সংবিধান অনুযায়ী, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ আসনে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-৬ আসনটি শাহজাদপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসন থেকে হাসিবুর রহমান দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন।
এর আগে ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে যোগ দিলে ১৯৯৮ সালে সংসদ সদস্য পদ হারান। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি শিল্প উপ-মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে শাহজাদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পরে পৌরসভার মেয়র হয়েছিলেন। দেশের ইতিহাসে একেবারে গ্রাম পর্যায়ের রাজনীতি থেকে ওঠে এসে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারীদের মধ্যে তিনিও একজন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
ইইউডি/এএটি