‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’সহ বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের গীতিকবি নজরুল ইসলাম বাবু। কালজীয় এই গীতিকার ১৯৯০ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর মাত্র ৪১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
নজরুল ইসলাম বাবু ১৯৪৯ সালের ১৭ জুলাই, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জের চরনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে তৎকালীন সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের ছাত্রনেতা হিসেবে বেশ নামডাক করেছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আত্মগোপন করে চলে যান ভারতে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ক্যাম্পে যোগ দেন।
দেশ স্বাধীন হলে তিনি আবার লেখাপড়া, সাহিত্য ও সংগীতচর্চা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৭৮ সালে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গে প্রথম চলচ্চিত্রে গান লেখা শুরু করেন। তিনি যেসব সিনেমায় গান লেখেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘আঁখি মিলন’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সাক্ষী’, ‘মহানায়ক’, ‘নসিব’, ‘বউ শাশুড়ি’, ‘সুখ’, ‘প্রতিরোধ’, ‘শুভদা’, ‘প্রতিঘাত’, ‘উসিলা’, ‘চাকর’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘প্রেমের প্রতিদান’, ‘সিপাহি’ প্রভৃতি।
নজরুল ইসলাম বাবু ১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ সিনেমার গীত রচনার জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। আর মৃত্যুর তিন দশক পর ২০২২ সালে পান একুশে পদক।
২০১৭ সালে তাকে নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘নজরুল ইসলাম বাবু স্মারকগ্রন্থ’। গ্রন্থটি সংকলন করেছেন আরেক খ্যাতিমান গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। নজরুল ইসলাম বাবু বাংলাদেশ গীতিকবি সংসদের প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদের (১৯৭৮-৭৯) সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
নজরুল ইসলাম বাবুর গানের সংখ্যা ১১৩টি। এর মধ্যে ৫২টি আধুনিক ও ৯টি ধর্মীয় গান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’, ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো’, ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল’, ‘কথা বলব না বলেছি’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘কাঠ পুড়লে কয়লা হয়’, ‘ডাকে পাখি খোলো আঁখি’, ‘এই অন্তরে তুমি ছাড়া নেই কারও নাম’, ‘আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা’, ‘তোমার হয়ে গেছি আমি’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনের রাত’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’ ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এনএটি