টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’র সংস্কার চেয়ে এক হয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সদস্যরা। সংগঠনের সংস্কার চেয়ে শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় এক হন শিল্পীরা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ অভিনয়শিল্পীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার বেলা ১১ টার সময় আমরা সমমনা সংস্কারকামী পেশাদার অভিনয়শিল্পীরা নিকেতনের ‘গ্রাউন্ড জিরো’তে বসেছিলাম এবং পারস্পরিক আলোচনা এবং সেখানে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আমরা চাই দেশের মানুষ সেই সিদ্ধান্তগুলো জানুক এবং নিজেদের মতামত জ্ঞাপন করুক।
সর্বসম্মতিক্রমে যে পাঁচ দাবি জানালেন সাধারণ শিল্পীরা-
১. অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ- এর সাথে বেশ কয়েকবার আমরা আলোচনা করতে চেয়েছি। আলোচনার কথা তোলার পর তাদের নিয়ম অনুযায়ী চিঠি পাঠাই। চিঠি পাঠানোর পর ওনারা জানান যে ওনারা শুধুমাত্র সংগঠন এর সদস্য যারা নন তাদের সাথে বসবেন না। কিন্তু আমরা সকল সাধারণ পেশাদার অভিনয়শিল্পীরা একসাথে আলোচনা করে সংস্কার করতে চেয়েছি। তাই আজ ৭ তারিখ ওনাদের গ্রাউন্ড জিরোতে আমরা চায়ের দাওয়াত দিই। কিন্তু ওনারা ফিরতি চিঠিতে জানান যে ওনারা সংগঠন এর সদস্য যারা নন তাদের সাথে আলোচনা করবেন কিনা সেটা সাধারণ সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাবেন। সংস্কারকামী শিল্পীদের সংগঠনভুক্ত ‘সদস্য’ কিংবা ‘অ-সদস্য’ এই সকল শব্দ ব্যবহার করে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। সেই আচরণের প্রেক্ষিতে তাদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ মূলক বক্তব্য আশা করছি। আমরা তাদের বলতে চাই বাংলাদেশের সকল অভিনয়শিল্পীকে ‘সদস্য’ ও ‘ অ-সদস্য’ এই ধরনের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিতে না দেখে ‘অভিনয়শিল্পী’ হিসেবে দেখুন। আপনাদের সাথে কথা বলার অধিকার যেন সবাই পায় সে ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে এবং যে ঘটনা আপনারা আমাদের সঙ্গে ঘটিয়েছেন তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেবেন।
২.পরিবর্তনশীল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনমুখর বাংলাদেশে, অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ- এর বর্তমান কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলি, কার্যকরী সদস্য, এবং সাধারণ সদস্যদের মধ্যে যারা একটি নির্দিষ্ট শাসন কাঠামোর পক্ষে নিজেদের অবস্থান নিয়ে এবং সমস্ত মানবিক প্রসঙ্গগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে অমানবিক-অশিল্পীসুলভ আচরণ করেছেন, তাদের সবাইকে পুরো জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে এবং ১০ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে আমাদের সাথে ওনাদের বসতে হবে।
৩. উল্লিখিত এক এবং দুই নম্বর প্রস্তাবে যদি ওনারা অনীহা প্রকাশ করেন, তাহলে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এরমধ্যে (পারলে আজ বা কালকের মধ্যে) বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে এবং সকলকে পদত্যাগ করতে হবে।
৪. পদত্যাগ পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন রিফর্মেশন কমিটি গঠন হবে এবং সেই কমিটির আওতায় আগামী ৬ মাস সময়ের মধ্যে আমাদের সংস্কার প্রস্তাবনা অনুযায়ী এই সংগঠনটিকে কীভাবে আধুনিক, যুগোপযোগী এবং সকল পেশাদার অভিনয়শিল্পীদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলে ধরা যায় তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা করবে। এবং পরবর্তী নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি এবং পরিবেশ তৈরি করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৫. আমরা সংস্কারকামী সমন্বিত সাধারণ অভিনয় শিল্পীবৃন্দের পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন দৃশ্যমাধ্যমের অভিনয়শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, আহ্বান জানাচ্ছি যে- আসুন আমরা একযোগে আমাদের সকল অভিনয়শিল্পীর স্বার্থ, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে যে সংগঠন সেই ধরনের একটি সংগঠনের রূপরেখা প্রণয়ন করি। আমরা সবার উদ্দেশ্যে বলছি, আসুন বাংলাদেশের সকল দৃশ্যমাধ্যমের পেশাদার অভিনয়শিল্পীরা মিলে কথা বলা শুরু করি এবং নতুন করে বৈষম্যহীন একটি সংগঠন নির্মাণে একসঙ্গে এগিয়ে যাই।
শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইন্তেখাব দিনার, আজমেরী হক বাঁধন, নাদিয়া আহমেদ, এফ এস নাঈম, শ্যামল মাওলা, স্পর্শিয়া, সোহেল মন্ডল, কাজী নওশাবা, মৌসুমী হামিদ, মোস্তাফিজ নূর, খায়রুল বাসার, মনোজ প্রামাণিক, সেন্টু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪
এনএটি