ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

ক্যানসার ভুলে মঞ্চে গাইলেন লাকী আখন্দ

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
ক্যানসার ভুলে মঞ্চে গাইলেন লাকী আখন্দ গাইছেন লাকী আখন্দ, ছবি: রাজীন চৌধুরী-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গানের শক্তির কাছে ফুসফুসের ক্যানসার যেন নস্যি! প্রখ্যাত সুরকার, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী লাকী আখন্দ শনিবার (১৯ নভেম্বর) যেন সেই বার্তাই ছড়িয়ে দিলেন।

গানের শক্তির কাছে ফুসফুসের ক্যানসার যেন নস্যি! প্রখ্যাত সুরকার, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী লাকী আখন্দ শনিবার (১৯ নভেম্বর) যেন সেই বার্তাই ছড়িয়ে দিলেন।

এদিন দুপুরে ঢাকার গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন নামের নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে অনেকদিন পর গান গেয়ে শোনালেন লাকী আখন্দ।

কোনো গান মনে গেঁথে গেলে তা সারাবেলা সংক্রমণ করে শ্রোতাদের। তেমন অনেক গানের স্রষ্টা গুণী এই শিল্পীকে ফুসফুসের চেয়ে সুরের সংক্রমণই বেশি তাড়ায়।

অবাক করা ব্যাপার হলো, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে গড়ে ওঠা শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানটির জন্য নিজের ব্যান্ড হ্যাপী টাচের তরুণ সদস্যদের নিয়ে গত দুই দিন ধরে অনুশীলন করেছেন লাকী। উপস্থাপিকা শারমিন লাকির কাছ থেকে এ তথ্য পেয়ে মনে হলো, গানই আসলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পীর প্রাণ!

অনেকদিন পর মঞ্চে গাইবেন বলে দারুণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন লাকী আখন্দ। শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন গড়ার নেপথ্য কর্মী এরশাদুল হক টিংকু এ তথ্য জানান। হ্যাপী টাচকে নিয়ে তিনি সাজিয়ে রেখেছিলেন নিজের জনপ্রিয় কয়েকটি গানের পাঁচমিশালী (মেডলি)।

শুরুতে লাকী আখন্দ গেয়েছেন ‘আগে যদি জানিতাম’। এ সময় দেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা মঞ্চে উঠে তার সঙ্গে গলা মেলান। এরপর তিনি বলেন, ‘আমি আরও ৩০-৪০ বছর বাঁচতে চাই। ঈশ্বর-বিধাতা যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে আমি অবশ্যই অন্য সব কাজ বাদ দিয়ে আপনাদেরকে গান শোনাবো। ’

কথা বলার সময় স্পষ্ট হয়েছে লাকী আখন্দ কতোটা শারীরিকভাবে অনেক ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু মঞ্চে সমবেত হওয়া শিল্পীদের কাছে তিনি অনুরোধের সুরে বলেন, ‘আরেকটা গানের চার লাইন গাই?’ শরীরের কথা ভেবে তা করতে দিতে না চাইলেও মানুষটার স্পৃহার কাছে হার মানতে হলো সবাইকে।

এরপর লাকী আখন্দ পরিবেশন করেন তার দেশাত্মবোধক গান ‘স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে গান লিখেছি’। তার আগে এর গল্প বললেন তিনি। একথা আগে কখনও জানাননি। একদিন শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তার মনে হলো অনেক গান গেয়েছেন ও সুর করেছেন। এবার স্বাধীনতার ওপর গান করা উচিত। সেই ভাবনা থেকে ‘স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে গান লিখেছি’র জন্ম।

লাকীর মঞ্চত্যাগের পর তার গড়া ব্যান্ড হ্যাপী টাচের তরুণ-তরুণীরা পরিবেশন করেন ‘কে বাঁশি বাজায় রে’, ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ প্রভৃতি।

ক্যানসারে আক্রান্ত আরেক বরেণ্য সুরকার আলাউদ্দিন আলীও সংগীত পরিবেশন করেছেন এ আয়োজনে। গান গাওয়ার অদম্য ইচ্ছা থেকে তারপর আবার মঞ্চে ওঠেন লাকী আখন্দ। এ পর্বে তিনি পরিবেশন করেন ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’ এবং ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা। ’

শিল্পীদের পাশের দাঁড়ানোর এ অনুষ্ঠানে লাকী আখন্দকে ৪০ লাখ টাকার চেক ও বরেণ্য সুরস্রষ্টা আলাউদ্দিন আলীর হাতে ২০ লাখ টাকার চেক প্রদানের আগে পর্দায় তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। এখানে চলচ্চিত্র, সংগীত, টেলিভিশনের শিল্পীরা ছাড়াও ছিলেন শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৬
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।