ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

কার্তিকের কুয়াশায় লোক গানের ঘোর!

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৭
কার্তিকের কুয়াশায় লোক গানের ঘোর! কার্তিকের কুয়াশায় লোক গানের ঘোর- ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: বাঁশিতে সুর ওঠে, সুর নামে। দোতারায় আঙুল দোলে, আঙুল থামে। মোহনীয় তাল আসে তবলার আঙ্গিকে। তবে গায়েন এখনো গান ধরেননি। কার্তিকের কুয়াশার চাদর উপেক্ষা করে ততক্ষণে অবশ্য মাঠে জমে গেছে শত শত দর্শক শ্রোতা। এরপর গায়েন এলো, বাঁশিতে উঠলো নতুন ঢঙের ভুবন ভোলানো সুর। সে সুর মাটির, সে আওয়াজ গাঁয়ের। আর সে আওয়াজ সঙ্গে নিয়েই ধন্য ধন্য সুর তুললেন বাউলিয়ানার দল।

সামনে উপস্থিত শতশত দর্শকদের মাতিয়ে ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ ও ‘বাউলা কে বানাইলো রে’ গানের মধ্য দিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকউৎসবের পর্দা তুললেন বাংলাদেশের লোকসংগীতের গানের দল বাউলিয়ানা। এরপরেই মঞ্চে আসেন ফকির শাহবুদ্দিন।

তিনি কণ্ঠে ধারণ করেন ‘ও দীনবন্ধু, দয়া করো আমারে...’।

লাল নীল হলুদ সাদা আলোর মঞ্চে তখন শুধুই উৎসবের হলি। সে হলির রং মেখে ততক্ষণে নিজেদের রাঙিয়ে নিয়েছে সামনে উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা। ঢাকির ঢোলের তালের মতো নিজেদেরও সে তালে দোলাচ্ছিলেন প্রায় সবাই। সুর মেলাচ্ছিলেন অন্যরাও। লোকজ গানের ছন্দ সুরে চারদিকে শুধুই নিজেকে মেলে ধরার আহ্বান। যেন সে আহ্বানের ঘোরেই কেটে যায় অনেকটা সময়।

এরপর একে একে গায়েনের কণ্ঠে আসে- বন্দে মায়া লাগাইছে, গ্রামের নওজোয়ানসহ একাধিক গান। সে গানের সুরের র্ঝনাধারায় নিজেদের মেলে দিচ্ছিলেন লোকসংগীত প্রেমিকেরা। গানের তালে তালে নাচছিলেন আলাদা আলাদা দলে। প্রত্যেকটি গানই যেন ছিল সবার প্রাণের গান।

গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনের সুখ দু:খ আনন্দ বেদনা প্রেম অভিমান বন্দনার অন্যতম মাধ্যম হলো লোকসংগীত। দেশের শেকড়ের মতো তা ছড়িয়ে থাকে আমাদের গভীরে। আর সে গভীরতার বাঁকে বাঁকে আটকে থাকে আমাদের সংস্কৃতির উৎসমূল।

সে উৎসমূলের সন্ধানেই বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) পর্দা উঠলো ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসগীত উৎসব ২০১৭। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজনের প্রথম দিন এ মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের শাহবুদ্দিন ও বাউলিয়ানা। এছাড়া ভারতের পাপন, ব্রাজিলের মেরিসিও ও তিব্বতের তেনজিন চো’য়েগাল ছিলেন মঞ্চের অন্যতম নায়ক।

উৎসব নিয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম শান্তর সঙ্গে। তিনি বলেন, বাংলার লোকজ সংগীতগুলো যেন আমরা শহরে এসে ভুলতে বসেছি। তবে এ ধরনরে আয়োজন নিঃসন্দেহে সে গানগুলোকে অনন্য মাত্রা দেবে। এছাড়া এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের বাংলার গানগুলো পৌঁছে যাবে সমগ্র বিশ্বের কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
এইচএমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।