ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

তাহসানের সঙ্গে মঞ্চে, তিসার স্বপ্নপূরণ

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
তাহসানের সঙ্গে মঞ্চে, তিসার স্বপ্নপূরণ মঞ্চে একসঙ্গে, তাহসান-তিসা

চট্টগ্রাম: মাত্রই তাহসান তার ‘অভিমান আমার’ অ্যালবামের ‘টাইটেল সং’ অভিমান আমার গাওয়া শেষ করলেন। এরপর দর্শকদের উম্মাতাল, মুহুমুহু করতালির মধ্যেই তিনি ঘোষণা দিলেন, ‘ছোট্ট একটি সারপ্রাইজ আছে। আমার খুব প্রিয় একজন শিল্পী স্টেজে জয়েন করবে।শুনবেন ছোট্ট ভয়েসে বড় প্যাকেজ।এই প্রথম মঞ্চে গাইবে সে।তাকে সবাই সাপোর্ট করবেন।’

মুহূর্তেই মঞ্চজুড়ে নীরবতা। তাহসান ডাক দিতেই দর্শক সারি থেকে নরম পায়ে হেঁটে মঞ্চে ওঠলো মেয়েটা।

এরপরেই তাহসানের সঙ্গে গাইলেন ‘ছুঁয়ে দিলে মন’।

এই মেয়েটি্ তিসা দেওয়ান। রাঙামাটির গানের পাখি। গত ৩১ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের গাওয়া দুটি গানের ভিডিও দেওয়ার পর থেকে যে মোটামুটি ‘বড়’ তারকা।

উপরের চিত্রটি ১১ নভেম্বর সন্ধ্যার, রাজধানীর গ্রামীণফোনের কার্যালয় মিলনায়তনের। মাসখানেক আগে তাহসানের অভিমান আমার অ্যালবামটি জিপি মিউজিকে মুক্তি পায়। সেই সময়ের ঘোষণা অনুযাযী এদিন জিপি মিউজিক থেকে যে ৫০০ শ্রোতা সবচেয়ে বেশিবার অ্যালবামের গানগুলো স্ট্রিমিং করে শুনেছেন, তাঁদের নিয়েই আয়োজন করা হয় তাহসানের  কনসার্ট।

এর আগে জিপি মিউজিক থেকে একটা প্রতিযোগিতা হয় ‘তাহসান কভার’ শীর্ষক। সেই প্রতিযোগিতায় গান পাঠান তিসা দেওয়ান। যথারীতি নির্বাচিত হন। স্বপ্নের শিল্পী তাহসানের সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাওয়ার সুযোগ চলে আসে তার সামনে। সেদিন আরও বেশ কয়েকজনের সুযোগ হয় তাহসানের সামনে গান গাওয়ার। তবে একমাত্র তিসার ভাগ্যেই জুটেছিল তাহসানের সঙ্গে গাওয়ার।

তাহসানের সঙ্গে মঞ্চ শেয়ারের পর চারদিন কেটে যাচ্ছে-কিন্তু এখনও ঘোর কাটছে না রাঙামাটির বছর আঠারোর কন্যার।

যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনের ওপার থেকে শোনাচ্ছিলেন, ‘তাহসান ভাইয়ের সঙ্গে গান করবো তা ছিল এক জীবনের স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্নটা এতো দ্রুত ধরা দেবে কল্পনাতেও ছিল না। তার সঙ্গে গাইতে গিয়ে বারবার গলা ধরে আসছিল, নার্ভাস হচ্ছিলাম। কিন্তু তিনি বারবার উৎসাহিত করে গেলেন বলে গানটা শেষ করতে পারলাম।

‘তার সঙ্গে গান গাওয়া, তার অনুপ্রেরণা-এই সমস্ত কিছু কখনও ভোলার নয়। অনুভূতিটা কিরকম বোঝাতে পারবো না। এতটুকু বলতে পারি-অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে যাচ্ছে আমার পুরোটাজুড়ে। ’-গলায় আবেগ ঝরছিল তিসার। প্রিয় শিল্পীর সঙ্গে গাইছে তিসা

এবার বলা যাক তিসার তারকা হওয়ার গল্পটা। দুটো ছোট্ট ভিডিও। একটার স্থায়ীত্ব ৩ মিনিট ২২ সেকেন্ড। অন্যটা একেবারেই মিনিটের আশেপাশে-১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের। হাতে গিটারের ঝড়, দরাজ কণ্ঠ আর স্পষ্ট উচ্চারণে প্রথম ভিডিওটাতে মেয়েটার গলা শোনালো তাহসানের গাওয়া-‘তুমি আর তো কারও নও, শুধু আমার’, আর পরেরটাতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী কিশোর কুমারের-‘যাব কই বাত বিগার যায়ে। ’

বন্ধুবান্ধবের গণ্ডি পেরিয়ে তার গাওয়া এই দুটি গান যখন প্রথমবারের মতো ফেসবুকের পর্দায় ভেসে এল, অনলাইন জগত শুনল মন্ত্রমুগ্ধ এক কণ্ঠ। শুনল একটি নাম-তিসা দেওয়ান।

এরপর তাকে নিয়ে বাংলানিউজে ১৩ সেপ্টেম্বর ‘ফেসবুকে ঝড় তুলেছে যে মেয়েটির গান’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

১১ নভেম্বর তাহসানের সঙ্গে গান গাওয়ার আগে তিনি তার অনুজপ্রতিম যে মাত্রই গানের পৃথিবীতে সদ্যজাত তাকে নিয়ে আরও একরাশ প্রশংসা করে গেলেন।

বললেন, একদিন আমার ভাই, যে আমেরিকা থাকে সে আমাকে একটা গান ইনবক্স করলো আর বললো শুনে দেখো। আমি শুনলাম। দুর্দান্ত কণ্ঠ। পরে ফেসবুকে শেয়ার দিলাম। তাকে খুঁজে বের করে আমরা এখানে নিয়ে আসি।

বহু আগ থেকেই তাহসান ছাড়া চলে না তিসার। তার দর্শকপ্রিয় সব গানের প্রতিটি লাইনই যেন মুখস্থ-ঠোঁটস্থ তিসার। সেই প্রিয় শিল্পীর সঙ্গে গান করে আসলেন তিনি।

মাত্র দুমাসেই নিজের পৃথিবীটা যেনো বড় বদলে গেছে তিসার।

এ যেন জুলিয়াস সিজারের ইতিহাস বিখ্যাত সেই তিনটি শব্দ-ভিনি, ভিডি, ভিসি’র যথার্থ উদারহরণ।

তিসা-এলো, দেখলো, জয় করলো…

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।