ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

‘অভিনয়ের জন্য দেশ ছাড়া হয়েছি, মারও খেয়েছি’

শরিফুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
‘অভিনয়ের জন্য দেশ ছাড়া হয়েছি, মারও খেয়েছি’ ছোট পর্দার উদীয়মান অভিনেতা এস কে জহির/ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: অভিনয়ের শখ আমার অনেক দিনের। আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, তখন থেকেই মঞ্চ নাটকে অভিনয় করি। ওই সময়ে রাতে বাসা থেকে পালিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিনয় করতে যেতাম। পরে বাসায় ফিরলে বাবা খুব মারতো। তবুও অভিনয় থেকে আমাকে সরাতে পারেনি।

এখন আমার স্বপ্ন সত্য হয়েছে। ইতোমধ্যে রূপালী প্রান্তর, ম্যানপাওয়ার, ঝামেলা আনলিমিটেড, ইতি ভালোবাসা সহ ৭ টি বাংলা নাটকে কাজ করেছি।

এখন সুটিং চলছে আরো তিনটি নাটকের, যেগুলোর নাম এখনি বলা যাচ্ছে না। তবে সব থেকে ভালোলাগার বিষয় হলো এই অল্পদিনের মধ্যেই আমি মোশারাফ করিম ভাই, শামিম জামান ভাই, সাজু খাদেম ভাই, জয় রাজ ভাই এবং আ.খ.ম হাসান ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। কথাগুলো বলছিলেন ছোট পর্দার উদীয়মান অভিনেতা এস কে জহির।

বাস্তব জীবনে জহির মালায়েশিয়াতে প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী। সেখানের স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এখন মালায়েশিয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা তিনি।

ছোট পর্দার উদীয়মান অভিনেতা এস কে জহির/ছবি: রাজীন চৌধুরীসম্প্রতি মালায়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন কয়েকটি নাটকে অভিনয়ের জন্য। এসময় অভিনয়ের ফাঁকে একান্ত আলাপচারিতায় গত ১ বছরে একজন অভিনেতা হিসেবে বিকশিত হওয়াসহ ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিষয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ছোট পর্দার উদীয়মান এ অভিনেতা। জহিরের গল্পের কিছু চুম্বক অংশ তুলে ধরা হয়েছে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।

মূলতো নিজের অনিচ্ছায় পরিবারের চাপে পড়ালেখার কাজেই এসএসসি পাস করার পর মালায়েশিয়াতে পাড়ি জমান জহির। সেখানে বিজনেস অ্যাডমিনিসট্রেশনের উপর ডিপ্লোমা করে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে সেখানে তার মিনি মার্কেট, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, আইটি সেন্টার, এক্সপোর্ট ইমপোর্টসহ একাধিক ব্যবসায় রয়েছে।

জহির বলেন, বাবার নিষেধ থাকা সত্ত্বেও আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম, তখন চট্টগ্রামের ‘ভৈরবী শিল্প গোষ্ঠী’র হয়ে অভিনয় করতাম। স্কুল ফাঁকি দিয়ে প্রায়ই ছুটে যেতাম চট্টগ্রামে। ফলে এসএসসির পরে বাবা বাধ্য হয়ে আমাকে মালায়েশিয়ায় পাঠায় পড়ালেখা করতে।

তবে এ যাত্রায়ও জহিরের বাবার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তাকে দেশের বাইরে পাঠালেও অভিনয়ের ভূত নামেনি জহিরের ঘাড় থেকে। ব্যবসায়িক জীবনে শত ব্যস্ততার মধ্যে মালয়েশিয়াতেও ‘মামা শিল্প গোষ্ঠী’র সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি।

সেখানেই আনোয়ার হোসেন নামের এক প্রযোজকের সঙ্গে পরিচয় হয় জহিরের। তার হাত ধরেই ২০১৬ সালে ‘রুপালী প্রান্তর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ছোট পর্দায় সক্রিয় হন মালায়েশিয়া প্রবাসী এ ব্যবসায়ী।

ছোট পর্দার উদীয়মান অভিনেতা এস কে জহির/ছবি: রাজীন চৌধুরীজহির বলেন, নাটক, অভিনয় আমার ভালোবাসার জায়গা। এর জন্য যা যা করা দরকার আমি করবো। তবুও অভিনয় ছাড়তে পারবো না। আমি এই লাইনটাকে যে কেমন ভালোবাসি সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।

তিনি বলেন, আপনি জানলে হয়তো হাসবেন, টেলিভিশন নাটকে আসার পর আমি যখন আমার দ্বিতীয় নাটক ‘মেঘের আকাশে’ অভিনয় করি তখন টানা তিন রাত-দুই দিন ঘুমাতে পারিনি। সব সময়ে মনে হয়েছে আমাকে কখন ডাকবে, কখন আমার পার্ট আসবে, কখন আমার শর্ট নিবে। পরে অভিনয় শেষ করে বাসায় গিয়ে একটি ফ্রেশ ঘুম দিয়েছি।

বাংলা নাটকের অভিনেতাদের মধ্যে জহিরের পছন্দের অভিনেতা মোশারফ করিম, সাজু খাদেম, শামিম জামান এবং জয় রাজ। তাদের সম্পর্কে জহিরের মূল্যায়ন হলো- তারা প্রত্যেকে অত্যান্ত ভালো অভিনয় করেন এবং ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ভালো মানুষ। তবে তিনি অভিনয়ে আইডল মানেন বাংলা নাটকের সফল অভিনেতা মোশাররফ করিমকে।

ফেনী সদরের ছনুয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করা এই ব্যবসায়ী অভিনেতার এখন একটাই স্বপ্ন। আর তা হলো বাংলা নাটকের একজন ভালো মানের অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য অবশ্য তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
এসআইজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।