ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

যে নায়িকাদের মৃত্যু ঘিরে কাটেনি ‘রহস্য’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
যে নায়িকাদের মৃত্যু ঘিরে কাটেনি ‘রহস্য’ ওপরে বাঁ থেকে শ্রীদেবী, মীনাকুমারী ও দিব্যা ভারতী; নিচে বাঁ থেকে পারভিন ববি, মধুবালা ও জিয়া খান

সম্প্রতি দুবাইয়ে মৃত্যু হয়েছে বলিউড সুপারস্টার ‘শ্রীদেবী’র। প্রথমে হার্ট অ্যাটাক, এরপর অজ্ঞান হয়ে বাথটাবে পড়ে পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে বলা হলেও এখন অনেক সংবাদমাধ্যমই বলছে ‘রহস্যজনক’।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভিজাত শহর দুবাইয়ের নিভৃত হোটেলে শ্রীদেবীর নিথর পড়ে থাকায় ভারত ছাড়িয়ে এ সন্দেহ ও সংশয় ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়। খোদ স্বামী বনি কাপুরকেও রাখা হয়েছে সন্দেহভাজন তালিকায়।

মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞ ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা নানা বিশ্লেষণ শুরু করেছেন। পঞ্চাশবর্ষী সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যুটিতে জীবনের স্বাভাবিক যবনিকাপাত বলছেন না কেউই।

রহস্যময় মৃত্যুর তালিকায় শ্রীদেবী প্রথম নন। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে লাস্যময়ী বলিউড তারকাদের ভাগ্যে। অনেক নায়িকার মৃত্যু নিয়ে এখনও রয়েছে চরম রহস্যের ধূম্রজাল।

রহস্যজনক মৃত্যুর মিছিলে প্রথম নাম হিসাবে স্থান হয়েছিল মধুবালার। রোমান্টিক এই নায়িকা ১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যান। তখনও বলা হয় হৃদরোগের কথা। প্রথমে তাকে যে কবরে সমাহিত করা হয়, সেখান থেকেও মরদেহটি সবার অগোচরে সরিয়ে ফেলা হয়। আসলে কী কারণে মধুবালার মৃত্যু হয়েছিল এবং কেন তার মরদেহ সরিয়ে ফেলা হয়, তা আজ পর্যন্ত উন্মোচিত হয়নি। জীবনের মতোই মৃত্যুতেও রহস্যময় হয়ে আছেন তিনি।

৩৯ বছর বয়সে নায়িকা মীনাকুমারীর মৃত্যুও রহস্যাবৃত হয়ে আছে। তার অভিনীত সেরা ও তুমুল জনপ্রিয় ছবি ‘পাকিজা’ মুক্তির মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে এই অভিনেত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে জমাট হয়ে আছে নানা রহস্য।

২০১৩ সালে মারা যান সম্ভাবনাময়ী নায়িকা জিয়া খান। তার মৃত্যুকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘প্ররোচিত আত্মহত্যা’ নামে। জিয়া খান নিজে সুইসাইড নোট-এ কয়েকজনের নাম লিপিবদ্ধ করে গিয়েছিলেন। প্রথমে খুব হৈ চৈ হলেও পরে সব কিছু ধামাচাপা পড়ে যায়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও উস্কানিদাতারা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এক সময়ের হার্টথ্রব পারভিন ববি’রও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। ২০০৫ সালে নিজের ফ্ল্যাটে পাওয়া যায় তার মৃতদেহ। তার মৃত্যুর সন্তোষজনক কারণ জানাতে পারেনি কেউই।

সবচেয়ে বেশি আলোড়ন উঠেছিল দিব্যা ভারতীর মৃত্যুতে। ১৯ বছরের এই নায়িকাকে দারুণ সম্ভাবনাময়ী বলেছিলেন অনেকেই। অল্প বয়সেই তিনি বোম্বের এক নম্বর নায়িকার স্থানটি দখলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালের একদিন নিজের বহুতল ফ্ল্যাটের নিচে পড়ে ছিল দিব্যার মরদেহ। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে তখন মিডিয়ায় তীব্র শোরগোল ওঠে। পরে সব রহস্য মাটিচাপা দিয়ে মৃত্যুর কারণকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সবশেষ শ্রীদেবীর মৃত্যুর পরপরই বোম্বের নায়িকাদের রহস্যময় মৃত্যুর ঘটনাগুলো সামনে চলে আসতে থাকে। সেইসঙ্গে যুক্ত হয় নানা সন্দেহ ও সংশয়। প্রতিদিনই শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে নতুন নতুন তথ্য প্রকাশ পেতে পাচ্ছে। দ্রুত বেগে বাড়ছে রহস্যের বিস্তার। তার রহস্যময় মৃত্যুর পর সন্দেহের তালিকায় চলে এসেছেন শ্রীদেবীর পারিবারিক ও পেশাগত জীবনের অনেক নিকটজন। মোটের ওপর সুস্থ ও নীরোগ জীবনের অধিকারী দক্ষিণ ভারতের এই গ্ল্যামারাস সুপারস্টারের মৃত্যুকে সহজভাবে নিচ্ছে না কেউ। দূর প্রবাসের হোটেল কক্ষের বাথটাবে একাকি মরে পড়ে থাকার যুক্তিগ্রাহ্য কারণও খুঁজে পাচ্ছে না কেউ।

একটি আনন্দঘন বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে মারা যাওয়ার কথা নয় শ্রীদেবীর। আবার সেদিনই না বলে ভারত থেকে স্বামী বনি কাপুরের দুবাইয়ে যাওয়া অবাক করেছে অনেককে। শ্রীদেবীর সুরতহাল রিপোর্ট থেকেও জানা যাচ্ছে বিচিত্র নানা তথ্য। সবাই বিশ্বাস করছেন যে, মৃত্যুটি স্বাভাবিক নয়, রহস্যজনক।  

কিন্তু কী সেই রহস্য? আদৌ কি জানা যাবে সেই রহস্যের পেছনে লুকিয়ে থাকা সত্য? নাকি রহস্যময় মৃত্যুর শিকার বোম্বের অন্যান্য নায়িকাদের মতোই মিলিয়ে যাবে শ্রীদেবীর মৃত্যুর ঘটনাটিও?

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।