ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

বিয়ে করবো আরও তিন বছর পর: মেহজাবিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৮
বিয়ে করবো আরও তিন বছর পর: মেহজাবিন অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী

ছোটপর্দায় দাপিয়ে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী। ২০০৯ সালে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে মিডিয়াতে পা ফেলেন তিনি। বর্তমানে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে এই অভিনেত্রী। পুরো অর্জনটাই দর্শক ও ভক্তদের ভালোবাসার কারণে হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। 

শুটিংয়ের ফাঁকে বাংলানিউজের সঙ্গে আড্ডায় মেহজাবিন বলছিলেন, একজন শিল্পীর কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া হচ্ছে দর্শক ও ভক্তদের ভালোবাসা। যেটা আমি পেয়েছি বলে হয়তো এখনো ভালো কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি।

এজন্য সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সামনের দিনগুলোতেই আশা করছি তাদের এমন সাপোর্ট পাবো। ...গত বছর মেহজাবিন অভিনীত ‘বড় ছেলে’ নাটকটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ইউটিউবে যা ভিউ হয় রেকর্ড সংখ্যক। এখনও অনলাইনে মেহজাবিনের কোনো নতুন কাজ প্রকাশ পেলে দর্শকের অন্যরকম আগ্রহ দেখা যায়। তবে টিভির তুলনায় অনলাইনের জন্য মেহজাবিন কাজ করেন খুব কম।   

তাহলে কি অনলাইন মাধ্যমে কাজ করার ক্ষেত্রে এই অভিনেত্রীর আগ্রহ কম? নিজমুখে বললেন, আমি চাই টিভিতেই বেশি কাজ করতে। অনলাইনে তেমন একটা কাজ করা হয় না। তাই বলে যে কাজ করতে সমস্যা তেমনটিও নয়। আলাদাভাবে অনলাইন-বেজড কাজ করতে হবে এটা আমার মাথায় কখনোই কাজ করে না। পুরো বিষয়টি নির্ভর করে স্ক্রিপ্টের উপর। তবে আমার সবসময় টার্গেট ও পছন্দের জায়গা টিভি।

অনলাইন ও টিভির মধ্যে কোথায় কাজ করে বেশি সাড়া পান? লাস্যময়ী অভিনেত্রীর জবাব, অবশ্যই টিভি। এখন তো টিভির সব কাজই অনলাইনে মুক্তি পাচ্ছে। আর যে কাজটি প্রকৃতপক্ষে ভালো ও দর্শকদের ভালো লাগে, সে কাজটির রেসপন্স এমনিতেই ভালো পাওয়া যায়। সেটি টিভির হোক কিংবা অনলাইনের।

শোনা যায় এখন টিভির দর্শক কম। তবে টিভির অনেকগুলো কাজ অনলাইনে প্রকাশ করার পর বেশ সাড়া ফেলছে। তাই অনেকে দাবি করছেন, টিভির কাজ হিট করার ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু মেহজাবিন সেটা মনে করেন না। বলেন,  এটা আসলে আমি বিশ্বাস করি না। যদি আমার লাস্ট হিট নাটকটির (বড় ছেলে) কথাই ধরে নেই, তাহলে সেটা কিন্তু অনলাইনের কাজ ছিল না। ওটা একটি চ্যানেলে দেখানোর পর অনলাইনে প্রকাশ পেয়েছিল। তাই কাজ ভালো ছিল, সেজন্য দর্শক সাড়া দিয়েছেন।  

ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, টিভির কাজের ক্ষেত্রে অটোমেটিক্যালি একটা প্রমোশন হয় ওয়ার্ড অব মাউথের মাধ্যমে। কেউ একজন কাজ দেখে ভালো লাগলে তিনি অন্যদের গিয়ে বলেন। এরপর আস্তে আস্তে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু অনলাইনে কাজের ক্ষেত্রে নিজেদেরই অনেক প্রমোশন করতে হয়, ফেসবুকে শেয়ার দিতে হয়। আর ‘বড় ছেলে’ টিভিতে দেখে দর্শকদের ভালো লেগেছে বলেই পরে অনলাইনে হিট হয়েছে।

অনলাইন কি টিভির দর্শক কমাচ্ছে?  মেহজাবিন বলেন, একদমই না। যারা টিভির দর্শক তারা টিভি দেখবেনই। মুরুব্বি ও বয়োজ্যেষ্ঠ অনেকে মোবাইলে, ল্যাপটপে বা ইউটিউবে নাটক দেখতে পছন্দ করেন না। তারা ঠিকই টিভি দেখেন। আমার তো তাদের জন্যও কাজ করতে হবে। আমি শুধু নেট-বেজড দর্শকের জন্যই শুধু কাজ করবো সেটাও কিন্তু নয়। আমার বয়োজ্যেষ্ঠ দর্শকও প্রয়োজন। আর আমি সবসময় বিশ্বাস করি সঠিক সমালোচনা ও প্রশংসা তারাই করতে পারেন, যাদের বয়স একটু বেশি। তরুণদের কিছু সমস্যা রয়েছে। তারা যেদিকে যেটা দেখছেন বা শুনছেন তারা সেদিকেই ছুটে যান। কিন্তু বয়োজ্যেষ্ঠরা বুঝেশুনেই নির্দিষ্ট কাজটি দেখেন।  ...অনেকেই নিজের প্রশংসাটাই শুধু শুনতে চান। কিন্তু মেহজাবিন একদমই তেমন নন। তিনি প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও শুনতে পছন্দ করেন। ভুলগুলো কেউ ধরিয়ে দিলে তাতেও তিনি খুশি হন। কারণ তিনি সবসময় নিজের কাজের নেতিবাচক দিকগুলো জানতে আগ্রহী।  

শোবিজ অঙ্গনে মেহজাবিনের বিচরণ অনেকদিন ধরে। তবে কখনো তিনি কাউকে প্রতিযোগী মনে করেন না। তার ভাষ্যে, আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেক শিল্পীর নিজস্ব একটি রাস্তা রয়েছে। যেখানে অন্য কেউ এসে হাঁটতে পারবেন না। আমাদের সিনিয়র অনেকে ভালো কাজ আগেও করেছেন, এখনো করছেন। তারা সবার পছন্দের ও অনেক জনপ্রিয়। আমি কিন্তু চাইলেই তাদের রাস্তায় আসতে পারবো না। তাদের কাজ করার ধরন বা তাদের দর্শক এক রকম। আমারটা এক রকম, কেউ কারওটা নিতে পারবেন না। তা কাউকে আমি প্রতিযোগী মনে করি না।

ভক্তরা বলেন, মেহজাবিনের রূপ ও শারীরিক গঠনে কোনো পরিবর্তন আসে না। অভিনয়ের শুরুতে তিনি যেমন ছিলেন এখন ঠিক একই রকম দেখতে! এর রহস্য কী? মেহজাবিন বলেন, আসলে এটার কোনো রহস্য নেই। আমার দেহের গঠনটিই এমন। আরেকটু বয়স হলে হয়তো পরিবর্তন আসবে। আর আমি একদমই নিজের যত্ন নেই না। প্রচুর খাই, প্রচুর অনিয়ম করি। কোনো রকম ব্যায়ামও করি না।

সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুকের চেয়ে ইনস্টাগ্রাম বেশি পছন্দ করেন মেহজাবিন। কারণ এতে বিশ্বের নামিদামি সবাইকেই সহজে পাওয়া যায়। ফেসবুকের চেয়ে ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ার সংখ্যাও বেশি। যেটা তিনি বেশ উপভোগ করেন। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের দ্রুত সাড়া দেওয়াটাও তাকে আনন্দিত করে। তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার থাকার বিষয়টি আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। কারণ আমি কোনো সামাজিক কাজ করতে উদ্যোগ নিলে বা পোস্ট দিলে ভক্তদের ব্যাপক সাড়া পাই। যেটা খুব ভালো একটা ব্যাপার।

২০০৯ সালে মেহজাবিন অভিনয় শুরু করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সিনেমায় তাকে কাজ করতে দেখা যায়নি। বহু সিনেমার প্রস্তাব পেলেও সবকিছু মনমতো না মেলায় এখনো বড় পর্দায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি তার। বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার সিনেমার প্রস্তাবও পেয়েছেন। তবে আগে দেশে কাজ না করে সেখানে কাজ করতে চান না তিনি।  

মেহজাবিনের কথায়, যেকোনো সময় সিনেমায় কাজ শুরু করে দিতে পারি। আমার যদি কোনো গল্প পছন্দ হয়ে যায় তাহলে তা করে ফেলবো। তবে অবশ্যই ভালো স্ক্রিপ্ট ও হিট হবে এমন সিনেমায় কাজ করতে চাই। কলকাতা থেকেও অনেকবার অফার এসেছে। কিন্তু সব না মেলায় কাজ করা হয়নি। আর আগে দেশে কাজ করে প্র্যাকটিস করি তারপর বাইরে।

হুটহাট অনেক তারকার বিয়ের খবর শোনা যায়। তাই মেহজাবিনের কাছে প্রশ্ন ছিল বিয়ে করছেন কবে? তার সোজাসাপ্টা জবাব, মনে হচ্ছে বিয়ে করবো আরও তিন বছর পর। তিন বছর পর আমার নতুন করে আর কিছু করার বাকি থাকার কথা না। তাই এই সময়টাকে আমার সঠিক মনে হচ্ছে।

কেমন পাত্র চান? মুখে হাসি এই অভিনেত্রী বললেন, ‘যাকে বিয়ে করবো, তাকে অবশ্যই আমার চেয়ে বেশি মেধাবী ও সৃজনশীল হতে হবে। যার কাছ থেকে আমি প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শিখবো। আর তিনি যে সেক্টরে কাজ করুন না কেনো, সে সেক্টরে যেন অনেক ভালো অবস্থানে থাকেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৮

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।