ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে তারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৮
এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে তারা কুমার বিশ্বজিৎ, জেমস, বাপ্পা মজুমদার, হাবিব ওয়াহিদ, আসিফ আকবর, মমতাজ

জনপ্রিয় হওয়া আর তা ধরে রাখা দু’টো একেবারেই ভিন্ন বিষয়। মিডিয়া ক্যারিয়ারে অনেকেই জনপ্রিয়তা পান কিন্তু সবাই তা ধরে রাখতে পারেন না। তবে এমন কিছু তারকা আছেন, যারা জনপ্রিয়তার ধারাটি শেষ পর্যন্ত ধরে রাখেন সাবলীলভাবেই। দেশীয় সঙ্গীতের এমন ক’জন তারকা হলেন- কুমার বিশ্বজিৎ, জেমস, আসিফ আকবর, মমতাজ, বাপ্পা, হাবিব ওয়াহিদ প্রমুখ।

জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থানটি এখনও তারা ধরে রেখেছেন। এজন্য ভক্ত-শ্রোতামহলে তাদের নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই।

তাদের যেকোন একটি কাজের অপেক্ষায় মুখিয়ে থাকেন সঙ্গীতপিপাসুরা।

বলে রাখি, অ্যালবামের দীর্ঘ যুগের অবসানের পর সিডি মাধ্যমের প্রচলন শুরু হয়। সিডি মাধ্যম অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র একযুগ সময়ের মধ্যে সিডি প্রথা বিলুপ্ত হয়। এখন চলছে অনলাইনভিত্তিক ইউটিউবনির্ভর গানের বাজার।

অ্যালবাম, সিডির পর বর্তমান ইউটিউবনির্ভর গানের বাজারেও দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন বিশ্বজিৎ, জেমস, বাপ্পা মজুমদার, মমতাজ, অাসিফ আকবর, হাবিব ওয়াহিদ প্রমুখ শিল্পীরা। জনপ্রিয় এই তারকাদের নিয়ে বাংলানিউজের আজকের আয়োজন-

জেমস
জেমস- যার গান শোনার আগে নাম শুনেই হই-হুল্লোরে মেতে ওঠেন ভক্ত-শ্রোতারা। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এই রকস্টারের। বাংলাদেশের সিনেমার পাশাপাশি বলিউডে প্লেব্যাক করে নিজের জাত প্রতিভা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে জানান দেন বাংলা সঙ্গীতের এই মহাতারকা।  

বলিউডে গাওয়া তার কণ্ঠের গানগুলো হচ্ছে- ‘ভিগি ভিগি (গ্যাংস্টার)’, ‘চল চলে (ও লামহে)’, ‘আলবিদা (রিপ্রাইস)’, ‘রিশতে (লাইফ ইন এ মেট্রো)’, ‘বেবাসি (ওয়ার্নিং থ্রিডি)’। এ গানগুলোর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই।  

তবে এখন তার গান করা অনেকটা ব্যাকরণীক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই গানে তাকে খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে এমন শ্রোতা পাওয়া দুষ্কর- যারা জেমসের গানের জন্য মুখিয়ে নেই। সঙ্গীতজীবনে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন দেশসেরা এই রকস্টার।

কুমার বিশ্বজিৎ
কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গীত ক্যারিয়ার প্রায় ৪০ বছর ছুঁই ছুঁই। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। তা অবশ্য অডিও-সিনেমা দুই মাধ্যমেই এবং সমানতালে। জনপ্রিয়তার সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এখনও তিনি নিয়মিত গান প্রকাশ করে যাচ্ছেন।  

সম্প্রতি তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান শ্রোতামহলে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। এর মধ্যে ‘বৃষ্টি এলেই আসো তুমি’ এবং ‘বলতে পারিনি’। তার আগে কুমার বিশ্বজিতের সর্বশেষ অ্যালবাম ‘সারাংশে তুমি’র মিউজিক্যাল ফিল্মটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।  

জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতার কারণে এখনও তাকে গানে নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে। গান গাওয়ার পাশাপাশি এখন তিনি নিয়মিত সুর-সঙ্গীতও পরিচালনা করছেন। সামনে আসছে তার কণ্ঠের বেশকিছু চমক। সঙ্গীত ক্যারিয়ারে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের অনেক পুরস্কার পেয়েছেন গুণী এই সঙ্গীততারকা।

আসিফ আকবর
অসাধারণ কণ্ঠ আর গায়কীগুণে বাংলা গানের যুবরাজ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। ২০০১ সালে প্রকাশিত অাসিফের ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবামটি বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় সঙ্গীতশিল্পে সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড করে। রেকর্ডটি এখনও শীর্ষস্থানে রয়েছে।  

তারপর থেকে গানের সব মাধ্যমে দাপটের সঙ্গে কাজ করে আসছেন আসিফ। ক্যারিয়ারের মাঝখানে দীর্ঘদিন গান থেকে দূরে ছিলেন তিনি। এখন আবার স্বমহিমায় একের পর এক গান উপহার দিচ্ছেন। এককথায় বলতে গেলে সেমি সিনিয়র শিল্পীদের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি গান প্রকাশ করছেন তিনিই।  

শ্রোতামহলে আসিফের দারুণ গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি মাথায় রেখে অডিও কোম্পানিগুলোও তাকে নিয়ে কাজ করতে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে ‍উঠেছে। বলাই যায়- এখন চলছে আসিফ কণ্ঠের দাপট। তার হাতে রয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক অপ্রকাশিত গান।  

সেই ধারাবহিকতায় মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) ডিজিটাল সলিউশনের ইউটিউব চ্যানেল রসগোল্লা থেকে ভিডিওতে প্রকাশিত হচ্ছে তার কণ্ঠের ‘একটা গল্প ছিলো’ শিরোনামের নতুন গান। গানটিতে তার সঙ্গে মডেল হয়েছেন চিত্রনায়িকা তানহা তাসনিয়া। সঙ্গীত ক্যারিয়ারে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কর, মেরিল-আলো পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন যুবরাজখ্যাত আসিফ।

মমতাজ
বাংলা গানের ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন লোকসম্রাজ্ঞী মমতাজ। একটা সময় তিনি শুধু সাধারণ মানুষের শিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু এখন তিনি সব শ্রেণির মানুষের শিল্পী। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই অডিওর পাশাপাশি সিনেমাতেও দেশসেরা মেধাবী সঙ্গীত পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে আসছেন তিনি। এ তালিকায় রয়েছেন- প্রিন্স মাহমুদ, অর্ণব, হাবিব ওয়াহিদসহ আরও অনেকে।  

অডিও-সিডি যুগের পর বর্তমান ইউটিউবের যুগেও তার কণ্ঠের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। এ মাধ্যমে তার কণ্ঠের ‘লোকাল বাস’ গানটি ব্যাপক আলোচিত হয়। এছাড়া ‘সত্ত্বা’ ছবিতে তার গাওয়া ‘না জানি কোন অপধাধে’ গানটিও ইউটউবে বেশ সাড়া ফেলে।  

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অডিও-প্লেব্যাক এবং স্টেজ শোর মাধ্যমে দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মাতিয়েছে আসছেন লোকমাতা মমতাজ। সিনেমা এবং অডিও-ভিডিও গানের বাজারে এখনও তার বেশ চাহিদা রয়েছে।  

শুধু তাই না, বড় বাজেটের লোক এবং আইটেম ঘরানার গানে প্রযোজকদের চাহিদা যেন মমতাজই। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ছাড়াও আরও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে- মাটি, মানুষ ও শেকড়ের শিল্পী মমতাজ।

হাবিব ওয়াহিদ
সঙ্গীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ। তার হাত ধরে বাংলাসঙ্গীতে দারুণ একটা পরিবর্তন এসেছে। গান গেয়ে শুধু নিজে জনপ্রিয় হয়েছেন তা নয়, তার সুর-সঙ্গীতে গান গেয়ে অনেকে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন। সব ঘরানার গানে তার রয়েছে সমান দক্ষতা।  

২০০৩ সালে ‘কৃষ্ণ’ গানের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেলেও ‘ভালোবাসবো বাসবো রে’ গানের মাধ্যমে সব শ্রেণির মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন হাবিব। তার অধিকাংশ অ্যালবামই শ্রোতামহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।  

সবচেয়ে বড় কথা হলো, হাবিবের হাত ধরে এদেশে অনেক শিল্পী ও সঙ্গীতপরিচালক তৈরি হয়েছেন। সঙ্গীত ক্যারিয়ারে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, সিটিসেল মিউজিক অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।

বাপ্পা মজুমদার
গুণী সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার। শ্রোতামহলে সব সময় সমান জনপ্রিয়তার ধারাটি ধরে রেখেছেন বর্তমান দলছুট ভোকালপ্রধান। মানসম্পন্ন কথার রুচিশীল গান মানেই বাপ্পা। বাপ্পা মজুমদার বাংলা গানের আরেকটি আর্শিবাদের নাম।  

বাপ্পা ‘পরী’, ‘অাজ তোমার মন খারাপ মেয়ে’, এবং ‘দিন বাড়ি যায়’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার সুর-সঙ্গীতে ‘তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম’ গান গেয়ে সর্বশেষ মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পান জেমস।  

বর্তমানে বেশ কয়েকটি প্রজেক্টের কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বাপ্পা।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬ ২০১৮
ওএফবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।