ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

‘সাম্প্রতিক কাহিনি ও অভিনয় বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনার

সংকট তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ তারকাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২২
সংকট তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ তারকাদের

দেশের ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও ওয়েব সিরিজ বিস্তারের কারণে দেশের নাট্যাঙ্গন ও অভিনয়শিল্প কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- এ বিষয় নিয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার (৫ নভেম্বর) ‘সাম্প্রতিক কাহিনি ও অভিনয় বাস্তবতা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে অভিনয় শিল্পী সংঘ।

‘সাম্প্রতিক কাহিনি ও অভিনয় বাস্তবতা’ শীর্ষক এ সেমিনারে অভিনয় অঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।  

আলোচনার শুরুতে নির্মাতা ও অভিনেতা তৌকীর আহমেদ টেলিভিশন নাটক ও অভিনয়ের দুর্বলতা, নাটকের বাজেটসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন। এরপরই শুরু হয় আগত অতিথিদের বক্তব্য।

নাটকের অতীত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে অভিনেতা জাহিদ হাসান বলেন, এখন আমরা নাটকের শুটিং করি এক দিনে। কারণ বাজেট কম, সময় কম। এই মানসিকতা আমাদের নাটক ও টেলিভিশন শিল্পকে শেষ করে দিয়েছে। এতদিন ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির মতো এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি।  

এ সময় জাহিদ হাসান গল্প লেখা ও অভিনয়ের বিষয়টি তুলে ধরে আরো বলেন, অভিনয়ের পাশাপাশি আমরা অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী লেখালেখির বিষয়ে কাজ করি। সেক্ষেত্রে গল্প এবং সংলাপে বেশ কিছু ঘাটতি থাকে। যার জন্য অভিনয় এবং গল্প ঠিকঠাক কাজ করে না। এছাড়া এখন রাতে স্ক্রিপ্ট দিয়ে বলে সকালে শুটিং, সেটাও আবার এক দিনেই শেষ হবে, তাহলে আমরা নিজেদের কী আর উপস্থাপন করব! 

সেমিনারে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, আমাদের মুখের মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেছে। আর পিঠের মেরুদণ্ডের কথা বাদই দিলাম। আমরা আসলে যা কিছু বলি তা করতে পারি না। তাই মনে হয়, বলে নয়, করে দেখাতে হবে। তা না হলে টেলিভিশন নাটক ও ছোট পর্দার শিল্পীরা ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, যেদিন থেকে টেলিভিশন নাটক কন্ট্রাক্টে চলে গেছে, সেদিন থেকেই এই ইন্ডাস্ট্রি শেষ হয়ে গেছে। মাছের দামের মতো দামাদামি করে এখন নাটক নির্মাণ করা হয়। এর কারণও আছে অনেক, যেগুলো আমরা জানি কিন্তু বলার সাহস রাখি না। তাই আমাদের নিজেদের আরও শক্ত হতে হবে।

অভিনেত্রী তারিন জাহান বলেন, এখন সবকিছুই ভিউয়ের ওপর নির্ধারণ করা হয়। আর সবচেয়ে বড় শিল্পী এখন ভিউয়াররা। তারা দেখলেই নাটক হিট হয়। যার ফলে টেলিভিশন কোম্পানিগুলো ভিউয়ারদের কথা মাথায় রেখে শিল্পী ও গল্প নির্ধারণ করেন। তাই আমি মনে করি এখন শিল্পীদের থেকেও বড় শিল্পী ইউটিউব-ফেসবুকের দর্শকরা।

আক্ষেপ প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন, আমাদের শিল্পীদের এখন শুধু অভিনয় দিয়ে পেট চলে না। তারা তাই সেটে বসেই অভিনয়ের পাশাপাশি কন্টেন্ট তৈরি করেন। আসলে আমাদের পেশা আমরা নিজেরাই ছোট করে ফেলছি। তাই নিজেদের অধিকার নিজেদেরই বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন মামুনুর রশিদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, জয়া আহসান, সাজু খাদেম, বৃন্দাবন দাস, সালাউদ্দিন লাভলু, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম, সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, গাউসুল আলম শাওনসহ অনেকে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।