ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

আমরা যুদ্ধ করছি আর মেসি-নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে: তপু

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২২
আমরা যুদ্ধ করছি আর মেসি-নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে: তপু

আর মাত্র দুদিন পরই  কাতারে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল-২০২২’। বরাবরের মতো বাংলাদেশের মানুষও মেতেছে এই আয়োজনকে ঘিরে।

বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের সমর্থকই বেশি।

দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু ছোটবেলা থেকেই ব্রাজিল সমর্থক।  

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের মতামত জানিয়েছেন তপু।

সেখানে তপু লেখেন, জীবনের প্রথম থেকেই আমি ব্রাজিল দলের সমর্থন করে এসেছি। সেই ১৯৯৪, ১৯৯৮ এবং ২০০২ বিশ্বকাপের ব্রাজিল দল ছিল আমার জন্যে একটা বিস্ময়। রোনালদো, রোনালদিনহো, রিভালদো, রবার্তো কার্লোস এদের খেলা ছিল যেন একটি শিল্প। আমার দৃষ্টিতে রোনালদিনহো পৃথিবীর অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। পেলে, ম্যারাডোনা, মেসি, রোনালদোর সঙ্গে রোনালদিনহোর নাম ও উচ্চারিত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, যদিও তার খেলোয়াড়ি জীবন খুব দ্রুতই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

তপুর কথায়, ২০০২ বিশ্বকাপের পর আমি ফুটবল খেলা ওভাবে আর অনুসরণ করতে পারিনি। ভাবতাম আমাদের সময়ের ফুটবলের সর্বোচ্চ সৌন্দর্য দেখা হয়ে গেছে (বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের মাধ্যমে)। এর কিছু বছর পর দুটি নাম ঘুরে ফিরে কানে আসতে থাকে মেসি এবং রোনালদো। যদিও মনে মনে ভাবতাম নতুন কি দেখবো আর? কি আর দেখা সম্ভব? পেলে, ম্যারাডোনা, ইয়োহান ক্রুইফ, জর্জ বেস্ট, আলফ্রেডো দি স্তেফানোর খেলাও দেখা হয়েছে ফুটবল আর্কাইভের পুরনো ক্লিপ্সগুলো থেকে, আর নতুন কিই বা হতে পারে?

এই গায়কের ভাষ্য, এরপর মাঝে মাঝে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও লা'লিগা দেখা, সঙ্গে আমার মুগ্ধতা ক্রমাগত বেড়েই চলা, আর বুঝতে পারা ফুটবল মুগ্ধতায় শেষ বলে কিছু নেই। আমাদের বয়সের সকল ফুটবল প্রেমীর এরপরের গল্প জানা। এই দুইজন খেলোয়াড় আমাদের উপহার দিয়েছে কিছু অনিন্দ্য সুন্দর মুহূর্ত। প্রতিবছর সর্বোচ্চ গোলদাতা অথবা ব্যালন ডি'ওর যেন এই দুজনের জন্যেই বরাদ্দ ছিল।

তপু লেখেন, অনেকের মতোই আমার মনে হয় মেসি জন্মগতভাবে একজন সাবলীল ফুটবলার, আর রোনালদো হচ্ছে কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে গড়ে তোলা একজন। তবে একান্ত নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভালোলাগার জায়গা থেকে আমার মনে হয় মেসি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় এবং একজন নিঃস্বার্থ, ভালো মানুষও বটে।

মেসিকে ভালোলাগার কারণও ব্যাখা করেন তপু লেখেন, মনোমুগ্ধকর ড্রিবলিং, সঠিক সময় সঠিক পাস, নিঃস্বার্থ, ফ্রি কিকে শ্রেষ্ঠত্ব, নির্ভুল পাস, দলের প্রয়োজনে নিজের অবস্থান মানিয়ে নেয়া, এছাড়াও আরও অনেক কারণে। সর্বোপরি প্রতিপক্ষের গতি প্রকৃতি সবার আগেই তার মস্তিষ্ক বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী খুব দ্রুত ড্রিবলিংই তাকে অন্যদের থেকে অনন্য করে তুলেছে, আর তার সঙ্গে নির্ভুল পাস ও ফ্রি কিক তো আছেই।

তপু লেখেন, অনেকেই হয়তো ভাবছেন একজন ব্রাজিল সমর্থক হয়ে কেন আমি মেসির বন্দনায় মত্ত? হ্যাঁ, আমি অবশ্যই ব্রাজিল দলের সমর্থক, তবে আমি তারচেয়েও বড় সমর্থক ফুটবল খেলার। যেই খেলোয়াড়ের খেলা আমার ছোট জীবনে এতো সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে তাকে অস্বীকার করাটা হবে ভণ্ডামি। আমি মনে প্রাণে চাই মেসি তার জীবনে একটা বিশ্বকাপ জিতুক, কিন্তু তা অবশ্যই ব্রাজিলকে না হারিয়ে। কী অস্বাভাবিক চাওয়া, কি অদ্ভুত দোটানায় এই মন। আমি বিশ্বাস করি আমার মতো এরকম অনেকেই আছেন, নাকি ‘সবাই কি ভাববে’ এই ভেবে চুপ করে আছেন? হা হা হা…ঝেড়ে কাশুন, বলে ফেলুন।

এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে কাতার যাচ্ছেন জানিয়ে তপু লেখেন, আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল একটা ওয়ার্ল্ডকাপ স্বশরীরে দেখার। এইবারের বিশ্বকাপ দেখতে যাবার জন্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যদিও ফাইনালের টিকেট পাইনি, কিন্তু ভালো কিছু খেলার টিকেট পেয়েছি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রাউন্ড অব ১৬ থেকে কাতার এ থাকব।

তপু আরো লেখেন, আমরা সারাজীবন ব্রাজিল -আর্জেন্টিনার নামে অনেক ঝগড়া, কথা কাটাকাটি দেখেছি, যা কখনোই একটা সীমারেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। ভাবুন তো আমরা এখানে যুদ্ধ করছি আর ঐদিকে মাঠে মেসি আর নেইমার গলা জড়িয়ে হাঁটছে! তবে যুক্তি-তর্ক-ঝগড়া একদম না করলে আবার বিশ্বকাপের আনন্দ থাকবে না। এবার ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা হলে আমার দেখতে খুব কষ্ট হবে। তবে এটুকু জানি শেষ পর্যন্ত ফুটবলেরই জয় হবে। সবাইকে ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ উপভোগের আগাম শুভেচ্ছা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২২
এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।