মৌলভীবাজার: হাকালুকি হাওরের বিলগুলোতে পাখি নিধনে অসাধু শিকারিচক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। পাখি নিধনকারীরা যেন অপ্রতিরোধ্য।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইনের নির্দেশে স্থানীয় সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে জলমহালের ইজাদার নিয়োজিত পাহারাদার, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের গার্ড ও স্থানীয় ভিসিজি (গ্রাম সংরক্ষক দল) সদস্যদের উৎকোচ দিয়ে অসাধু শিকারিরা বিলে বিষটোপ ও ফাঁদ পেতে দেশীয় ও পরিযায়ী পাখি নিধন করছে। এতে হাওরে প্রতিবছর পরিযায়ী পাখির আগমন কমেছে।
জানা গেছে, এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ জলাভূমি হাকালুকি হাওরে প্রতি শীতের শুরুতে শীতপ্রধান নানা দেশের পাখি আসতে থাকে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত হাওরের জলাশয়গুলো (বিল) এসব অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে। এবার হাওরে তেমন পাখির দেখা মিলেনি। যে কয়টি বিলে কিছু পাখির আগমণ ঘটেছে সেখানেও হানা দিচ্ছেন অসাধু শিকারিরা। দুই সপ্তাহ আগে হাওরের চাতলা, নাগুয়া, পিংলা বিলসহ কয়েকটি বিলে বিষটোপে ব্যাপক পাখি মারা যেতে দেখা যায়।
অন্যবছর শিকারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তৎপরতা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে দেখা গেলেও এবার তা চোখে পড়েনি। সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে মালাম বিলের তীরবর্তী বাসিন্দারা বিলের পারে ব্যাপক হাঁস জাতীয় মৃত পাখি পড়ে থাকতে দেখেন। অনেকেই উৎসব করে তা সংগ্রহও করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, হাওরপাড়ের বর্নি ইউনিয়নের কাজিবন্দ ও নোয়াগাঁয়ের চিহ্নিত পাখি শিকারি আলী রাজা ও সফিক মিয়ার নেতৃত্বে শিকারিচক্র রোববার (২১ জানুয়ারি) রাতে মালাম বিলে বিষটোপ দিয়ে ব্যাপক পাখি শিকার করেছে। বিলের পাহারাদার মুহিবুর রহমানের সঙ্গে আঁতাত করেই শিকারি চক্র বেশ কয়েকদিন ধরে পাখি নিধন করছে। শিকারিরা দেড়/দুইশ পাখি ধরে নিলেও তাদের বিষটোপে রোববার রাত ও সোমবার সকালে মালাম বিলে অন্তত ৫শ পাখি মারা গেছে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বড়লেখা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, খবর পেয়েই তিনি হাকালুকি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। পাখি নিধনে জড়িত চক্রের সদস্যদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৪
বিবিবি/এএটি