বাগেরহাট: পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের অন্যতম অর্থকারী বৃক্ষ গোলপাতা। প্রতিবছর গোল গাছের পাতা কাটা ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন সাড়ে চারশ বাওয়ালি।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বনবিভাগ থেকে অনুমতি (পাশ-পার্মিট) নিয়ে সুন্দরবনে যাবেন বাওয়ালিরা। ইতোমধ্যে গোলপাতা আহরণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
১৩ বছর ধরে গোলপাতা আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করা মোংলার দক্ষিণ চরের বাসিন্দা বাওয়ালি মোজাম্মেল হাওলাদার বলেন, গোলপাতা কাটতে যাওয়ার জন্য নৌকা, বাস, দড়ি ও ধারালো দা-ছুড়ি তৈরি করেছি। বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রোববারই যাব সুন্দরবনে।
শরণখোলার মঠেরপাড় এলাকার বাওয়ালি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রতিবছর গোলপাতা আহরণের আগে নৌকা মেরামত করা লাগে। গোলপাতা আগের মতো এখন আর চলে না। ভালো দামও পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেও কষ্ট হয়। তারপরও পেশা টিকিয়ে রাখতে প্রতিবছর গোলপাতা কাটতে যাই।
এছাড়া গোলপাতা আহরণের জন্য নৌকাগুলো একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। এর কারণে গোলপাতা আহরণের মৌসুম শেষ হয়ে গেলে, নৌকাটিকে ফেলে রাখতে হয়। আর ফেলে রাখার কারণে প্রতিবছর মেরামতের জন্য অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয় বলে জানান তিনি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৫শ মণ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন নৌকাগুলো সুন্দরবনে থেকে গোলপাতা আহরণ করতে পারবে। সুন্দরবনের গোলপাতা ঘর ছাউনিতে ব্যবহার হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রিসোর্ট ও বাংলো বাড়িতে শোভাবর্ধনের জন্যও গোলপাতার ছাউনি দেওয়া হয়। মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে ভ্যাট ব্যতীত রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা।
দিন দিন গোলপাতার চাহিদা কমে যাওয়ায়, আগের তুলনায় গোলপাতা সংগ্রহকারীর সংখ্যা কমেছে। আগে যেখানে প্রতিবছর ১৫০ থেকে ২শ’টি নৌকায় গোলপাতা সংগ্রহ হতো। বর্তমানে তা শতকের নিচে নেমে এসেছে বলে দাবি বন বিভাগের।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, ২০২৩ সালে ৮৯টি নৌকায় ৪৪১ জন বাওয়ালি ১৬ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা সংগ্রহ করেছিলেন। এবছর কাল থেকে গোলপাতা সংগ্রহ শুরু হবে। পাশ সংগ্রহের আগে জেলে ও নৌকার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
এএটি