সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মিনি সুন্দরবন খ্যাত বনাঞ্চলের দেড় শতাধিক বাইন ও কেওড়া গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে।
উপজেলার সোরা এলাকায় মাদার নদীর চরে প্রায় পাঁচ দশক আগে গড়ে ওঠা বনভূমি থেকে এসব গাছ কাটা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী অংশের উপকূল রক্ষা বাঁধে মাটি দেওয়ার অজুহাতে গত চারদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিযুক্ত করা ঠিকাদারের লোকজন এসব গাছ কেটে সাবাড় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কাটা ১৩২টি গাছ জব্দ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যাদেশ পেয়ে সোরা এলাকার বাঁধে মাটি ফেলতে শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন অ্যান্ড কোং। এসময় প্রতিষ্ঠানটি ঝুড়ি-কোদাল ব্যবহারের পরিবর্তে এক্সকাভেটর দিয়ে চরের মাটি নিয়ে বাঁধের ওপর ফেলতে শুরু করে। তবে পুরোভাগজুড়ে কেওড়া ও বাইন গাছের বনভূমি থাকায় মাটি সংগ্রহের সুবিধার্থে সোমবার থেকে তারা চরের গাছ কেটে ফেলেন।
ঠিকাদারের ম্যানেজার আউয়াল হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী তুষার বর্মন ও অসিউল দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করাচ্ছিলেন। সামাজিক বনায়নের কোনো সাইনবোর্ড সেখানে না থাকায় ভুলবশত প্রায় ১০০ ছোট গাছ নষ্ট হয়েছে। তবে গাছ বিক্রির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
সোরা গ্রামের হুমায়ন কবীর জানান, এলাকাবাসীর নিষেধ উপেক্ষা করে এক্সকাভেটরের চালক সোহেল গাছ কাটায় নেৃতৃত্ব দেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো প্রতিকার মেলেনি। বাধ্য হয়ে বুধবার রাতে তিনি বাদী হয়ে কর্মরত শ্রমিকদের ব্যাপারে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঠিকাদারের লোকজন কাটা গাছ কেজি দরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
স্থানীয় রমজাননগর ইউনয়িনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আইনুল হক জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে ১৩২টি গাছ জব্দ করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার প্রিন্স রেজা জানান, খবর পেয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) লিটনকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
উপকূলের বনাঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উপকূলবাসীর জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৪
এসআই