দিনাজপুর: হিমালয়সহ বিভিন্ন স্থান থেকে শীত থেকে বাঁচতে ও খাবারের খোঁজে এসে অসুস্থ হয়ে পড়া আট শকুন চিকিৎসা শেষে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানের শকুন পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে শকুনগুলো অবমুক্ত করা হয়।
এ সময় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল-মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজী জেনিফার আজমিরি, সাকিব আহম্মেদ, ধর্মপুর বিট কর্মকর্তা মহসিন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শকুন পরিচর্যা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, শীত থেকে রক্ষা পেতে ও খাবারের খোঁজে এসব শকুন হিমালয়ের পাদদেশে চলে আসে। সেখানেও খাবারের ঘাটতি হলে তারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের লোকালয়ে আসে।
দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আসায় এই শকুন অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অসুস্থ এসব শকুনের চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।
আইইউসিএনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজী জেনিফার আজমিরি বলেন, আমাদের দেশে সাত প্রজাতির শকুন পাওয়া যায়। যার মধ্যে দুই প্রজাতির আবাসিক শকুন আর বাকিগুলো পরিযায়ী। এর মধ্যে রাজ প্রজাতির শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পরিযায়ী প্রজাতির মধ্যে হিমালয়ান গ্রিফন জাতের শকুন খাবারের খোঁজে সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের দেশে আসে। অসুস্থ হয়ে পড়া এসব শকুন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসা হয়। খাবারের অভাব ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে শকুনের সংখ্যা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল-মামুন বলেন, বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে ২০১৪ সাল থেকে এই কার্যক্রম চলে আসছে। এগুলো হিমালয় গ্রিফন জাতের শকুন। সীমান্ত পেরিয়ে যেসব শকুন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অসুস্থ হয়ে পড়ে সেগুলো উদ্ধার করে এখানে রাখা হয়। তারপর চিকিৎসা শেষে সেসব শকুন অবমুক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার আটটি শকুন আজকে অবমুক্ত করা হলো। এক বছরে বিভিন্ন স্থান থেকে আনা আটটি শকুনকে চিকিৎসা শেষে আকাশে অবমুক্ত হলো।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ বন বিভাগ ও আইইউসিএন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে কেন্দ্রটি চালু করা হয়। এখনও পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে প্রায় দেড় শতাধিক শকুন চিকিৎসা শেষে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৪
এসআরএস