ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

শহরের বাসাবাড়িতে হানা দিচ্ছে ‘বনের বানর’    

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
শহরের বাসাবাড়িতে হানা দিচ্ছে ‘বনের বানর’     দেয়ালের ওপর বসে বিস্কুট খাচ্ছে বানর। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: প্রকৃতির মাঝে খাবার সংকটের কারণে বেড়েছে বানরের উৎপাত। সুযোগ পেলেই বাসাবাড়িতে ঢুকে রান্না করা খাবার এবং কাঁচা সবজি ও ফলমূল নিয়ে যাচ্ছে।

একসময় বনজঙ্গলের ফলফলাদি খেয়েই বেঁচে থাকত বানরগুলো।

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল এবং কমলগঞ্জ উপজেলায় চলছে এই সমস্যা। বর্তমানে বনজঙ্গল কেটে ফেলায় দেখা দিয়েছে বানরের খাবার সংকট। খাবার না পেয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এ প্রাণীগুলো হুমকির মধ্যে পড়েছে। এদিকে বানর বন ছেড়ে লোকালয়ে আসার ঘটনায় পরিবেশকর্মীরা বনের খাদ্যসংকটকে দায়ী করছেন।

জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে খাবারের সন্ধানে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করছে বানর। কখনো ফল গাছে, কখনো বা ঘরের চালে কিংবা বহুতল ভবনের ছাদে। সকাল থেকে বিকেল, এভাবেই দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বানর। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে বাসাবাড়িতেও হানা দিচ্ছে তারা। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে বানরের দলকে তাড়িয়ে দিলেও আবার চলে আসে। আবার কেউ কেউ ডেকে খাবারও দেন। অনেকের রান্নাঘরের সামনে, ছাদে, কার্নিশে খাদ্যের জন্য চেয়ে থাকতে দেখা যায় বানরের দলকে।

স্থানীয়রা জানান, বনে খাদ্যসংকট, অন্যদিকে ঘনবসতির কারণে বানরের সংখ্যা কমে গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ প্রাণীকে টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানান এলাকাবাসী।

মো. মামুন মিয়া বলেন, বানর সারাক্ষণ উৎপাত করে। প্রতিনিয়তই বাসাবাড়ি ও দোকানে খাবারের জন্য হানা দেয়। এছাড়া গাছের ফল, সবজি খেয়ে ফেলে এবং নষ্ট করে। কখনো ৩-৪টা বানর আসে। আবার ভানুগাছ রোডে অনেকগুলো দলবেঁধে ঘুরে বেড়ায়। মানুষের ফেলা যাওয়া খাবার তারা খায়। তবে এদের বাঁচাতে হবে, খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

ইকবাল মিয়া বলেন, আমি সারাদিন পর্যটকের কাছে আনারস বিক্রি করি। অনেক পর্যটক অর্ধেক খেয়ে বাকিটা ফেলে যায়। আমি আবার খুঁজে খুঁজে সব এক জায়গায় রাখি। হঠাৎ ১০-১৫ বানর ও ছোট ছোট বাচ্চারা এসে এগুলো লাফ দিয়ে নিয়ে যায়। দূরে দেখা যায় দেয়ালের ওপড় বসে খাচ্ছে।

কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমেদ আজাদ মান্না বলেন, বনে বড় বড় গাছ নেই। বানর বড় গাছ খুঁজে সেখানে তারা আনন্দে ঘুরে লাফালাফি করে থাকে। বর্তমানে সেটা নেই বললেই চলে। তাছাড়া বড় সমস্যা হলো খাবার সংকট। শুধু বানরের কাবার নয় সব ধরনের প্রাণীর খাবার সংকট আছে লাউয়াছাড়া বনে। লোকালয়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীগুলো দেখা যায়। কেউ কেউ খবর দিলে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা আটক করে বনে দিয়ে যায়।  

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, মাঝে মাঝে বানরগুলো দল ছুটে চলে আসে লোকালয়ে। স্থানীরা দেখার পর আমাদের খবর দিলে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসি। পরে বনে অবমুক্ত করি।  

বানরের জন্য বনে পর্যাপ্ত খাবার আছে। কোনো সংকট নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।