ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

ফিচার

১০ টাকার গোলাপ ৩০ টাকা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯
১০ টাকার গোলাপ ৩০ টাকা! দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুল

ময়মনসিংহ: প্রিয়জনকে মনের না বলা কথাটি জানাতে চাই ফুল। ভালোবাসার সুগভীর অনুভূতির এই দিনটিতে তাই ফুল না হলে যেন চলেই না!

এমনকি চির আকাঙ্ক্ষিত দিনটিতে সচেতন অগ্রসর তরুণ-তরুণীদের হাতে পছন্দের ফুল তুলে দিতে ব্যস্ততার কমতি নেই ফুল ব্যবসায়ীদেরও।  

কিন্তু ফুলের বাজারে ভালোবাসার উত্তাপ শুরু হওয়ায় বেশ বিপাকেই পড়েছেন প্রেমিকযুগলরা।

অন্য সময় কেনা ১০ টাকার গোলাপ তাদের কিনতে হচ্ছে ৩০ টাকায়। কয়েক গুণ বেড়েছে প্রায় সব ধরনের ফুলের দাম।  

এই নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও ভালোবাসার মধুর সমর্পণের দিনের দিকে চেয়ে সেই কষ্ট মাটিচাপাই যেন দিয়েছেন তরুণ-তরুণীরা।  

তবে ‘ফুলের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত যশোরের গদখালীতে ফুলের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ময়মনসিংহের বাজারে তিনগুণ দাম রাখছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।  

ভালোবাসা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ফুলের চাহিদাকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে ফুল চাষের ব্যবস্থা করা হলে এই দাম সহনীয় মাত্রায় রাখা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তারা।  

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের জব্বার আলী কমপ্লেক্স সংলগ্ন রজনীগন্ধা, মালা স্টোর, ফুলের মেলাসহ একাধিক দোকান ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এখানকার প্রতিটি উৎসবেই মূলত যশোরের গদখালী আর রাজধানীর শাহবাগ থেকে আনা ফুলে নিজেদের সাজান তরুণীরা।  

এসব দোকান থেকে কেনা ফুলেই ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন পাড়ি দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসেও খোঁপায় রক্তরাঙা লাল গোলাপ আর লাল শাড়ি পড়ে পথে নামবেন। বাঙালি নারীরা এই সাজেই পূর্ণরূপে ফুটিয়ে তুলবেন নিজেদের।  

ঘুরে বেড়াবেন ব্রহ্মপুত্র নদঘেঁষা জয়নুল উদ্যান কিংবা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বোটাকিন্যাল গার্ডেনে।  

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণে। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, ক্যান্ডুলা, জিপসিসহ নানা রঙের ফুলের সৌরভে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ।  

তবে এবার ভালোবাসার এই দিনটিকে ঘিরে উত্তাপ শুরু হয়েছে দামে।  

শহরের রজনীগন্ধা ফুলের দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শাহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গত বছর যশোর থেকে ৮ থেকে ৯শ’ টাকায় ১শ’ পিস গোলাপ কিনেছি। এবার এই গোলাপ কিনতে হয়েছে ১ হাজার ৭শ’ টাকায়।  

অর্থাৎ প্রতি পিস গোলাপের দাম পড়েছে ১৭ টাকা। আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে সামান্য লাভে আমরা প্রতি পিস গোলাপ ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।  

তিনি জানান, এই দিনটির জন্যই ফুল ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করেন। এদিন ভালো ব্যবসা না হলে পুঁজি হারাতে হবে।  

একই রকম দাবি করেন পাশের মালা স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার দাস। বাংলানিউজকে তিনি জানান, যশোর থেকে ফুল কিনে আনতে পরিবহন খরচও বেড়েছে।

তাছাড়া গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ দামে সেখান থেকে ফুল কিনতে হয়েছে। এখন সামান্য কিছুটা লাভ না করলে ব্যবসাই ছাড়তে হবে।  

শহরের কাঠগোলা এলাকার গোলাপ ফুল ক্রেতা মারুফ হোসেন মুন্না অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, বছরের অন্যান্য সময় ১০ টাকা করে লাল গোলাপ বিক্রি হয়। কিন্তু সেই গোলাপই এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। অন্যান্য ফুলের বিক্রি বাড়লেও দাম চড়া।  

শহরের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী ভিড় করেছেন এসব দোকানে। তাদেরই একজন বাংলানিউজকে বলেন, সাত সকালেই বাবা-মা’র সঙ্গে ভালোবাসা বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ফুল।  

তাদের উইশ করতেই ফুল কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম গতবারের চেয়ে অনেক বেশি। তবে গোলাপের দামে রীতিমতো আগুন লেগেছে। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ০৬০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮ 
এমএএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।