ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

মরক্কোর এই হারে গ্লানি নেই

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
মরক্কোর এই হারে গ্লানি নেই

গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউটে উঠেছিল মরক্কো। নকআউটে স্পেন ও পর্তুগালকে হারিয়ে ওঠে সেমিফাইনালে।

ফ্রান্সের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইনজুরি সংকট ছিল দলে। কিন্তু কোনও অজুহাত নয় খেলে গেছেন নিজেদের সেরটাই। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়াই করলো সমানে সমান। কাতারে প্রথম পাঁচ ম্যাচে প্রতিপক্ষের কাছে একটিও গোল হজম না করা দলটি শেষ পর্যন্ত আর এগোতে পারলো না। সেমিফাইনালে হেরে গেলো। নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে রক্ষণ দেয়াল ভেঙ্গে গেল, হারলো ২-০ গোলে। তবে এই হার মরক্কোর জাদুকরী বিশ্বকাপ যাত্রায় দাগ ফেলবে না বলে মনে করেন কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি।

প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে মরক্কো। এর আগে তাদের সেরা সাফল্য ছিল শেষ ষোলোতে খেলা। দারুণ পারফরম্যান্সের নজির তৈরি করে আরব বিশ্বে নজর কেড়েছে এবার তারা। রেগরাগি মনে করেন, এই জায়গায় পৌঁছাতে তারা যা করেছে তা অভাবনীয় এবং বিশ্ব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায় থেকে খুব বেশি দূরে নয় তারা।

বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালের মতো দলকে হারিয়ে একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছিল প্রায় ৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটি। প্রত্যাশা ছিল সাবেক ঔপনিবেশিক ফ্রান্সকে আটকে দিয়ে ফাইনালের স্বপ্নটা বাস্তবায়িত করার। দুরন্ত গতির ফুটবল ঠিকই উপহার দিয়েছে মরক্কানরা। বল দখলে এগিয়ে থেকে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোড়ানোর চেষ্টাও করেছে। তবে ফ্রান্সের স্কিল ও অভিজ্ঞতার কাছে আটকে গেছে। ফ্রান্স সুযোগ বুঝে দুই অর্ধে একটি গোল করে ঠিকই নিজেদের কাজটি সেরে রেখেছে। আর মরক্কো প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে একের পর এক আক্রমণ গড়ে কোনও সময় ফিনিশিং দুর্বলতা কিংবা প্রতিপক্ষের বাধায় ফাইনাল স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।

ম্যাচ শেষে মরক্কো কোচ বললেন, ‘আমরা সর্বোচ্চটা দিয়েছি, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কিছু ইনজুরি ছিল, আমরা (নায়েফ) আগুয়ের্দকে হারিয়েছি ওয়ার্মআপের সময়, (রোমেইন) সাইস, (নওসাইর) মাজরাউইকে পাইনি। কিন্তু কোনও অজুহাত নেই। ’

রেগরাগি আরও বললেন, ‘সূক্ষ্ম ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের। আমরা ম্যাচে ভালোভাবে খেলতে পারিনি, প্রথমার্ধে আমাদের অনেক বেশি টেকনিক্যাল ভুল ছিল এবং দ্বিতীয় গোল আমাদের শেষ করে দিলো। কিন্তু এটা আমরা আগে যা করেছি তা মুছে ফেলবে না। এই হার আমাদের জাদুকরী বিশ্বকাপ যাত্রায় দাগ ফেলবে না। ’

আজ যেখানে কাতারে উৎসব হতো, রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে যেতো উৎসবের রেণু; সেখানে কিনা এখন কেবলই বিষাদের ছোঁয়া। মরক্কো ছাড়াও তাদের সঙ্গে আরব কিংবা আফ্রিকার দেশগুলোরও বাধভাঙা আনন্দ দেখার সুযোগ মিললো না।

বিশ্বে মরক্কোর অবস্থান দেখে উচ্ছ্বসিত রেগরাগি, ‘আমরা বুঝতে পারছি যে আমরা এরই মধ্যে সেরা অর্জন করে ফেলেছি। মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভিতে আমরা সেটা জেনেছি, আমরা ছবিও দেখেছি। আমাদের দেশের সবাই আমাদের নিয়ে গর্ব করছে। আমি মনে করি গোটা বিশ্ব মরক্কান দলকে নিয়ে গর্বিত কারণ আমাদের মধ্যে যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল সেটা সবাই দেখেছে। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি, সততার সঙ্গে খেলেছি। ’   

আগামী শনিবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ খেলবে মরক্কো, প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। শেষটা জয় দিয়ে করতে চান রেগরাগি, ‘এটা মানসিকভাবে কঠিন হবে। যারা খেলেনি আমি তাদের সুযোগ দেবো এবং আমরা তৃতীয় হওয়ার চেষ্টা করবো। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো আমরা আমাদের দলের ভালো দিন সামনে এনেছি এবং মরক্কোর ফুটবল শীর্ষ পর্যায় থেকে বেশি দূরে নেই। ’

হারলেও মাথা উঁচু করেই মাঠ ছেড়েছে মরক্কো। অপ্রত্যাশিতভাবে এতদূর এসে এই হারে নিশ্চয়ই কোনও গ্লানি নেই!

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।