আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। সমর্থকদেরই তো আর তর সইছে না।
বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ বারবার আসে না। আর্জেন্টিনাকেই ধরা যাক, ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর দুইবার ফাইনাল খেলেছে তারা। দুইবারই ফিরতে হয়েছে মলিন বদনে। এবার আরো একটি ফাইনালের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আলবিসেলেস্তেরা। সামনে বাধা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। কোচ স্কালোনি অবশ্য আশা করছেন, এবার বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরতে পারবে আর্জেন্টিনা।
ফ্রান্সকে ধরাশায়ী করতে পরিষ্কার ছক কষে রেখেছেন স্কালোনি। এবার শুধু মাঠে সেটি প্রয়োগ করার পালা। ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ম্যাচ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই মুহূর্তগুলো আমাদের উপভোগ করতে হবে। এ সব কিছুই ইতিহাস হয়ে থাকবে। আশা করি বিশ্বকাপ জিততে পারব, এটা অসাধারণ হবে। আমরা জানি কীভাবে তাদের আক্রমণ করতে হয়, এনিয়ে পরিষ্কার পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমরা জানি, প্রতিপক্ষকে কোথায় আঘাত করতে পারব। ’
আর্জেন্টিনার যেমন লিওনেল মেসি, তেমনি ফ্রান্সের সেরা তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। বিশ্বকাপে নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন এবার। পাঁচ গোল করে গোল্ডেন বুট জয়ের দৌড়ে আছেন শীর্ষে, গোল্ডেন বলেরও সমান দাবিদার তিনি। কাল মেসি ও তার মধ্যে দারুণ এক লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছেন ফুটবল ভক্তরা। তবে এই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বাকিদের অবমূল্যায়িত করতে চান না স্কালোনি।
আর্জেন্টিনা কোচ বলেন, ‘কাজটা ব্যক্তিগতর চেয়েও বেশি দলগত। যদিও এমবাপ্পে একজন ভালো খেলোয়াড়। ফ্রান্সের অন্য খেলোয়াড় আছে যারা তাকে আরো ভালো বানিয়ে তোলে। সে এখনও তরুণ এবং উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ’
‘কালকের ম্যাচটা আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের, যা মেসি ও এমবাপ্পে দ্বৈরথের চেয়েও বড়। আমাদের দুই দলেরই প্রয়োজনীয় অস্ত্র আছে। তাই শুধু তারা দুজন নয়, বাকি খেলোয়াড়রাও ম্যাচে নির্ণায়কের ভূমিকা রাখতে পারে। ’
সময়ের সেরা দল নিয়ে কাতার এসেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে বড় ধাক্কা খায় তারা। তবে এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। তাতে খেলোয়াড়দের দৃঢ় মনোবলের প্রশংসা করেন স্কালোনি।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন থেকে আমরা মনে ধারণ করে নিয়েছি যে, আর্জেন্টিনা দল হবে সবার জন্য। যেকোনো ফুটবলারকে এই জার্সি পরার সুযোগ করে দেওয়া হবে। চার বছর ধরে আমরা সেটাই করে আসছি। আমরা দুর্দান্ত একটি দল তৈরি করেছি যারা কি না এই জার্সির জন্য নিজের জীবন দিতে পারে। যেই খেলুক না কেন, তারা নিজেদের সর্বোচ্চটা দেয়। ’
আগামীকালের পর আবারও চার বছরের জন্য বিদায় নেবে বিশ্বকাপ। জীবনের ক্লান্তি দূরে ঠেলে প্রায় মাসখানেক সময়টা অনেকেই আনন্দে কাটিয়েছেন, সেটা শুধুমাত্র বিশ্বকাপের কারণেই। আর্জেন্টিনার মতো দেশে তো ফুটবল খেলার চেয়েও বড় কিছু।
স্কালোনি বলেন, ‘ফুটবল হলো একটি খেলা, তবে আর্জেন্টিনায় এটি খেলার চেয়েও বেশি কিছু। বিশ্বকাপের সময় মানুষের খুশি থাকার ব্যাপারটি চমৎকার লাগে আমার। আমরা মানুষ এবং এসব বিষয় আমাদের রোমাঞ্চিত করে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২২
এএইচএস