ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

দৃঢ় কণ্ঠে বলতে পারছি না আমরা কোয়ালিফাই করব: মারুফুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
দৃঢ় কণ্ঠে বলতে পারছি না আমরা কোয়ালিফাই করব: মারুফুল

সম্প্রতি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এবার বাংলাদেশের সামনে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করার মিশন।

আজ রাতে এএফসি এশিয়ান কাপ অনূর্ধ্ব-২০ এর কোয়ালিফাই রাউন্ডে খেলতে ভুটানের উদ্দেশ্যে রওনা হবে মারুফুল হকের শিষ্যরা।  

আজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্রস্তুতি এবং লক্ষ্য নিয়ে জানিয়েছেন দলের মারুফুল হক এবং অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ। দলের কোচ বলেন, ‘১৬ আগস্ট এখানে সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ় কণ্ঠে বলেছিলাম চ্যাম্পিন হতেই যাচ্ছি। আজ এই মুহুর্তে সেই কণ্ঠে বলতে পারছি না আমরা কোয়ালিফাই করব। এর পেছনে নানা কারণ রয়েছ। ’

ইনজুরি এবং খেলোয়াড়দের ডেঙ্গু নিয়ে পূর্ণ শক্তির দল গঠন করতে পারেনি বাংলাদেশ। এছাড়া সাফের সেরা গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফকে ছাড়াই দল সাজিয়েছেন কোচ। দল নিয়ে খুব বেশি সময় একত্রে অনুশীলন করতে পারেননি বলে আত্মবিশ্বাস কম পাচ্ছেন মারুফুল। তিনি বলেন, ‘৪ তারিখে ট্রেনিং শুরু করেছি। ৫ তারিখে একটা ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলেছি। টাইম ছিল বিকাল ৪টা, আমরা সাড়ে তিনটায় ওয়ার্ম আপ শুরু করেছি, এরপর ওই দলের কোচ এসে জানাল ম্যাচ শুরু হবে সাড়ে চারটায়। এক ঘণ্টা ওয়ার্ম আপ করে ছেলেরা খেলতে নেমেছে। সেই ম্যাচের শেষ দিকে আমাদের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটা খেলোয়াড় রুস্তম হোসেন দুখু, তাকে নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা ছিল। আক্রমণ বা রক্ষণাত্মক সেটপিসে তার ওপর আমাদের একটা ভরসার জায়গা ছিল। ওই ম্যাচে ওর এসিএল আর মেনিস্কাস দুইটাই টিয়ার হয়। যেটা অপারেশন ছাড়া কোনোভাবেই সারানো সম্ভব না। ওর আর্থিক অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। বাফুফে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে বলে কথা দিয়েছে। ’
 
‘ওই ম্যাচ খেলে ৬ তারিখে যখন আমরা অনুশীলনে আসি, ৬ ও ৭ তারিখ আমাদের পর্যায়ক্রমে ৭ জন খেলোয়াড় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। ফলে ১২-১৩ জনকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছি এবং জাতীয় দলে ৪ খেলোয়াড় যারা গিয়েছিল, আমাকে জানানো হয় তাদেরকে তিন দিনের ছুটি দিতে হবে, যারা বসুন্ধরার খেলোয়াড় ছিল, তাদেরকেও তিন দিনের ছুটি দিয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা, আমি বললাম আমাদের যে দুজন খেলোয়াড় ছিল, তাদেরও তিন দিনের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। তখন কথা হয়েছে ১৩ তারিখ সবাই ক্যাম্পে যোগ দেবে। আমাদের যারা প্রাইমারি রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম, সবাই ক্যাম্পে যোগ দেবে। তো ওরা সেভাবে যোগ দিতে পারেনি, সেটা ক্লাবের পলিসি। এই হলো আমাদের প্রস্তুতি, আমি পূর্ণ স্কোয়াড পেয়েছি ৩ দিন হয়েছে। ১৫-১৭ এই তিন দিন আমি পুরো স্কোয়াড নিয়ে অনুশীলন করতে পেরেছি। ’ যোগ করেন তিনি।

একটা টুর্নামেন্টের আগে আরও বেশি সময় অনুশীলন প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন মারুফুল। একটা দলের সঠিক রসায়ন তৈরি করতে সকলকে একসঙ্গে আরও বেশি সময় অনুশীলন প্রয়োজন। এছাড়া ভিয়েতনাম গিয়েও অনুশীলনের খুব একটা সময় পাবে না বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ দল ভিয়েতনামের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। পৌছাবে আগামীকাল। একদিন পরেই বাংলাদেশের ম্যাচ সিয়িার বিপক্ষে। এত কম সময়ের প্রস্তুতিতে ভালো খেলা কঠিন।

মারুফুল বলেন, ‘এটা ফুটবল খেলা, এটা ক্রিকেট কিংবা কোনও ইন্ডিভিজুয়াল খেলা না যে ম্যাচের আগের দিন বা ম্যাচের দিন এসে যোগ দিয়ে খেলে ফেলবে। ফুটবলে কম্বিনেশনের প্রয়োজন আছে। এই কম্বিনেশনের জন্য মিনিমাম ৭ দিনও আমার মনে হয় যথেষ্ট না। বিশেষ করে এটা একটা যুব দল। যুব দলে ১৫ দিন সময় নিয়ে আমরা সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। ওখানে খেলোয়াড়রা অমানবিক পরিশ্রম করেছে। তাদের মনোযোগ ছিল, সে কারণে আমরা ১৫ দিন অনুশীলন করে জিততে পেরেছি। এবার কি হবে তা আমি বলতে পারছি না। ’

সাফের চাই এই প্রতিযোগিতা আরও বেশি কঠিন উল্লখ করে কোচ বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতাটা আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক। আমরা আগে ছিলাম সাফ রিজিয়নে। এখন যাচ্ছি এশিয়ান লেভেলে। এখানে প্রস্তুতির জন্য যত সময় প্রয়োজন, আমরা তত সময় দেইনি। এটা একটা কারণ। দ্বিতীয় কারণটা হলো, আমরা ফ্লাই করব আজকে রাতে। আজকে সারা রাত ফ্লাই করে কালকে দুপুর দুইটায় আমরা হোটেলে বোর্ডিং কমপ্লিট করব। আমাদের প্রথম ম্যাচ ২১ তারিখ। প্রত্যেকটা দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ সেশন থাকে, ডে বিফোর ওয়ান ডে। প্লাস টু, মানে ম্যাচের সঙ্গে যেটা প্লাস টু ডে আছে, সেই দিনটাতে আমরা অনুশীলন করতে পারব না। ম্যাচের আগের দিন হয়তো আমরা এক ঘণ্টা অনুশীলন করব। সব কিছু মিলে আমাদের যেভাবে পরিকল্পনা করা দরকার ছিল, সেভাবে পরিকল্পনা করতে পারিনি। ’

সল্প সময় হাতে নিয়ে এত বড় একটচা টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়া বিষয়ে দায় নিজের কাধেই নিলেন মারুফুল। তিনি বলেন, ‘আমরা বোঝাতে পারিনি এই টুর্নামেন্টটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল নাকি জাতীয় দলের প্রীতি ম্যাচ।  আমি কাউকে বোঝাতে পারিনি সেটা আমার ব্যর্থতা। নেপাল থেকে আসার পরে যদি আমি তাদের নিয়ে নিবিড় অনুশীলন করতে পারতাম, তাহলে আমি আপনাদের কথা দিতে পারতাম যে বাংলাদেশ এখান থেকে কোয়ালিফাই করতে পারবে, কারণ আমি ভিয়েতনাম সিরিয়ার খেলা দেখেছি, ভুটানের খেলা খুব কাছে থেকে দেখেছি। গুয়াম আমাদের থেকে একটু নিচে আছে, তারপরও যেহেতু তারা কম্পিটিশনে আছে... আমি মূলত ভিয়েতনাম আর সিরিয়াকে মূল প্রতিপক্ষ ধরছিলাম। তারা রিচেবল ছিল, তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট পাওয়া আমাদের দলের জন্য কোনো সমস্যা ছিল না। সব ঘাটতি মিলিয়ে আমরা সে পর্যায়ে আশ্বাস দিতে পারছি না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
এআর/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।