২০২৪ সাল বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য ছিল বেশ ঘটনাবহুল। এ বছরই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন।
এছাড়া ঘরোয়া ট্রেবল শিরোপা জিতেছে দেশের অন্যতম সেরা ক্লাব বসুন্ধরা কিংসও। সাফল্যের গল্পের পাশাপাশি রয়েছে হতাশাও। এদিকে আবারও ফিফার শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে বাফুফের কর্তাদের। আসুন, ফিরে দেখা যাক ২০২৪ সালের ফুটবলের উল্লেখযোগ্য অধ্যায়গুলো....
২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল ফিফা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফ) তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। ২০২৪ সালেও ফের ফিফার শাস্তির মুখে পড়ে বাফুফে। মে মাসের দিকে বাফুফের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে দায়িত্বে অবহেলার জন্য আর্থিক জরিমানা করে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শুধু তাই নয়, বাফুফের কয়েকজন স্টাফকেও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। সোহাগের শাস্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ায়।
দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে ২০১৩ সালে ট্রেবল জিতেছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ১১ বছর পর দ্বিতীয় ক্লাব হিসেব ট্রেবল জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করে বসুন্ধরা। স্বাধীনতা কাপ, লিগ শিরোপার পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতে ট্রেবল পূরণ করে তারা। আর এই তিন টুর্নামেন্টেই রানার-আপ হয় মোহামেডান।
এবছর সাবিনাদের সাফের শিরোপা ধরে রাখা ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের সবচাইতে বড় সাফল্য। ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে জোড়া শিরোপা এনে দেয় বয়সভিত্তিক দল। বছরের শুরুতে ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচ ছিল বেশ ঘটনাবহুল।
নির্ধারিত সময় ও টাইব্রেকারেও খেলা ড্র ছিল। ম্যাচ কমিশনার টাইব্রেকার অব্যাহত না রেখে আকস্মিক টস করেন। টস জিতেই শিরোপা উল্লাসে মাতে ভারত। এমন সময় বাংলাদেশ আপত্তি জানালে ঘটে বিপত্তি। শেষ পর্যন্ত যুগ্ম শিরোপা নির্ধারিত হয়। পরের মাসেই বাংলাদেশ নারী দল নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফেরে।
মেয়েদের পাশাপাশি সাফল্যের দেখা পায় ছেলেরাও। আগস্টে নেপালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। ৪ গোল করে গোল্ডেন বুট পাওয়ার সঙ্গে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন মিরাজুল ইসলাম। তবে ছেলেদের জাতীয় দলের পারফরম্যান্স ছিল দৃষ্টিকটু।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল এই বছর আটটি ম্যাচ খেলেছে। দুই জয়ের বিপরীতে ছয় ম্যাচে হতাশার হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দুটি জয়ই এসেছে প্রীতি ম্যাচে। একটি ভূটানে আরেকটি ঢাকায় মালদ্বীপের বিপক্ষে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এই বছর চারটি ম্যাচই হেরেছে বাংলাদেশ।
২০০৮ সালে প্রথমবার বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন কিংবদন্তি সাবেক ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন। এরপর চার মেয়াদে বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এবারও প্রথমে নির্বাচন করার কথা জানালেও পরে সেই অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান সালাউদ্দিন। বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচনের ঘোষণা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনই করেননি সংগঠক তরফদার রুহুল আমিন। সভাপতি পদে নির্বাচন করেন সাবেক ফুটবলার ও সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও দিনাজপুরের এফএম মিজানুর রহমান চৌধুরী। বিপুল ভোটে জয় লাভ করে সভাপতি হন তাবিথ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
এআর/আরইউ