করোনা ভাইরাস আতঙ্কে চীনের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ‘চাইনিজ সুপার লিগ’র এবারের আসর আপাতত মাঠে গড়াচ্ছে না। এমনটা হবে তা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল।
এমন আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে চীনের সব ক্রীড়া আসর হয় আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে, নয়তো অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এলো চাইনিজ সুপার লিগ নিয়ে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর মাঠে গড়ানোর কথা ছিল এবারের আসরের। এখন মাঠে ফেরার জন্য অনির্দিষ্টকাল অপেক্ষায় থাকতে হবে ইয়াইয়া তোরে, ফেলাইনি, অস্কার, হাল্কের মতো চাইনিজ লিগের তারকাদের।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) চীনে বসতে চলা প্রো লিগের এবারের আসর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন (এফআইএইচ)। এছাড়া ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিকের ফুটবল, বাস্কেটবল এবং বক্সিং বাছাইপর্বের খেলা চীন থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
আগামী ৮-৯ ফেব্রুয়ারি বেলজিয়ামের বিপক্ষে দুটি ফিল্ড হকি ম্যাচ খেলার কথা ছিল চীনা নারী দলের। ম্যাচগুলো পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এফআইএইচ জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী।
আগামী ২৪ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিককে সামনে রেখে ফেব্রুয়ারি থেকে বাছাইপর্ব শুরু হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে নারীদের ফুটবল ও বাস্কেটবল খেলা অস্ট্রেলিয়া ও সার্বিয়াতে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ফুটবল ম্যাচগুলো ইউহান, যেখান থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে, সেখানে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল।
এদিকে বক্সিংয়ের এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের বাছাইপর্ব চীনের নানজিং থেকে জর্ডানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৩-১৫ মার্চ নানজিংয়ে শুরু হওয়ার কথা ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের ইনডোর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, যা এখন হুমকির মুখে।
চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। এর মধ্যে ২ হাজার আক্রান্তের অবস্থা বেশ সঙ্গিন। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ার কারণ এই ভাইরাস মানুষের মাধ্যমে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্তের পরিবার কিংবা তাদের সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীরাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।
চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অন্য দেশগুলোতেও দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীনের সবগুলো প্রদেশ ছাড়াও অন্তত ২০টি দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শুরুতে উপসর্গ হিসেবে ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর এমন সব অসুখ দেখা দেয়। কিন্তু এর ফলে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
শুরুতে করোনা ভাইরাস ইউহানের বাজারে বিক্রি হওয়া কোনো বন্য প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন এর কারণে শহরের ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। পাশের শহরগুলোও প্রায় একই পরিস্থিতির শিকার। এর মধ্যে বহু বিদেশিও আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
এমএইচএম