সারা বিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে ভুগছে, সেখানে রোনালদোর নিজ ব্যান্ড 'সিআর সেভেন'র অন্তর্ভুক্ত দুটি হোটেলকে হাসপাতাল বানানোর খবর প্রকাশ করে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা, ডেইল মেইল, গালফ নিউজ, ফুটবল ইতালিয়া এমনকি জুভেন্টাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটও। এরপর থেকেই ক্রীড়া বিশ্বে হইচই পড়ে যায়।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছিল, পর্তুগালে অবস্থিত পেস্তানা সিআর সেভেন’ নামে রোনালদোর হোটেলে আপাতত বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। এমনকি চিকিৎসক ও স্টাফদের বেতনও নিজের পকেট থেকেই পরিশোধ করবেন তিনি। কিন্তু এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই এ নিয়ে প্রতিবাদ করেন পর্তুগালের অনেক সাংবাদিক। পরে সেগুলো শেয়ার করে জানান ক্রিস্টোফ টেরেউর।

মানু সেইঞ্জ নামের এক সাংবাদিক বলেছেন, 'খবরটি ভুয়া। পর্তুগালে রোনালদোর হোটেল হাসপাতাল বানানো হচ্ছে না। ' ফিলিপে ক্যাতিনো নামের এক সাংবাদিক তো এমন ভুয়া সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের একহাত নিয়ে বলেন, 'আরেকটা ভুয়া খবর। এটা মোটেই সত্য নয়। সাংবাদিকরা তথ্য জেনে কাজ করতে চায় না কেন আর ভুল সুত্র অনুসরণ করে কেন সংবাদ পরিবেশন করে?'

এদিকে রবার্ট নামের একজন টুইট করে বাস্তবতাও তুলে ধরেছেন। তিনি এক টুইটে লিখেছেন, 'কিছুক্ষণ আগেই রোনালদোর হোটেল-হাসপাতালে ফোন করেছিলাম। ওরা বলল আমি যদি প্রতি রাত ১০০০ ইউরো না খরচ করি তাহলে সেখানে থাকতে পারব না। এমনকি চিকিৎসকের খরচও আলাদাভাবে দিতে হবে। '

শুধু তাই না, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই টুইট ঝড়ের পর সংবাদটি নিজেদের সাইট থেকে সরিয়ে দেয় মার্কা। এই মার্কা-ই সবার আগে খবরটি প্রকাশ করেছিল আর সেটাই শুরুতে ভাইরাল হয়। বাকি সংবাদমাধ্যমগুলোও এই তথ্যসূত্র ব্যবহার করেই সংবাদ প্রকাশ করে। পরে নিজেদের সাইট থেকে নিউজটি সরিয়ে অন্য একটি নিউজ প্রতিস্থাপন করে ডেইলি মেইল। যদিও এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত গালফ নিউজ ও বেশ কিছু সাইটে সংবাদটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আর রোনালদোর পক্ষ থেকেও এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি।

এর আগে ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে প্যারাগুয়ের জেলখানায় আটক থাকা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহোকে ছাড়ানোর জন্য ৪ মিলিয়ন দিচ্ছেন মেসি এমন খবরও ভুয়া প্রমাণিত হয়।

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। এর প্রভাব পড়েছে ফুটবল বিশ্বেও। বন্ধ হয়েছে ইউরোপের সব ফুটবল আসর। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালির। দেশটির প্রায় সব মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৪৪১ জনের। দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২১ হাজার ১৫৭ জন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, গত আড়াই মাসে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসের প্রভাবে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, সেই কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৬৯ জন। অবশ্য এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭০ হাজার ৩৮৭ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২০
এমএইচএম/এমএমএস