করোনা মহামারির কারণে এবারের ব্যালন ডি'অর বাতিল করা হলেও ফিফা 'দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ডস' (ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার)-এর মঞ্চ ঠিকই প্রস্তুত হচ্ছে। এবার মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকাও প্রকাশ করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
করোনার কথা ভেবে শুরুতে দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ডস বাতিল করার পরিকল্পনা করেছিল ফিফা। কিন্তু বছরের শেষে এসে ঠিকই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। সাতটি আলাদা আলাদা বিভাগে এ পুরস্কার দেওয়া হবে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর দেওয়া হবে এই পুরস্কার। এরইমধ্যে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করতে অনলাইনে ভোটাভুটিও শুরু হয়ে গেছে। www.fifa.com—এই ওয়েবসাইটে ঢুকে যে কেউ মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে সেরা খেলোয়াড় ও কোচ বেছে নিতে পারবে। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া যাবে ভোট।
পুরুষ বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচনে বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে ১১ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। তালিকায় ছয়বারের বিজয়ী মেসি ও পাঁচবারের বিজয়ী রোনালদো ছাড়াও আছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, থিয়াগো আলকান্তারা, কেভিন ডে ব্রুইনে, সাদিও মানে, সের্হিও রামোস, মোহামেদ সালাহ ও ভার্জিল ফন ডাইক।
ফিফার সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি লাভ হলো সম্ভবত রবার্ট লেভানদভস্কির। কারণ গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে ট্রেবল জেতার পাশাপাশি এই পোলিশ স্ট্রাইকার গত মৌসুমে সবমিলিয়ে করেছেন ৫৫ গোল। অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতা বায়ার্নের হয়ে আসরের সর্বোচ্চ ১৫ গোল করেছিলেন তিনি। বুন্দেসলিগায় করেছিলেন ৩৪ গোল।
করোনা মহামারির কারণে ব্যালন ডি'অর বাতিল না হলে সেটাও হয়তো তার হাতেই উঠতো। মহামারিতে মৌসুমের অনেকটা সময় ভেস্তে যাওয়ায় ৬৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি'অর এবার স্থগিত করে দেয় ফ্রান্স ফুটবল। তবে ফিফার দ্য বেস্ট তার জন্য অন্য আরেক দরজা খুলে দিয়েছে। এখন দেখা যাক, ব্যক্তিগত সাফল্যের স্বীকৃতি তিনি পান কি না।
এদিকে ফিফার সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেলেও গত মৌসুমে মেসি, রোনালদো কিংবা নেইমারের ব্যক্তিগত অর্জন তেমন আহামরি ছিল না। দলগতভাবে মেসি কিছুই জিততে পারেননি। তার দল বার্সা গত চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্নের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপর তো ক্লাবই ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি।
যাই হোক, গত মৌসুমে মেসির ব্যক্তিগত অর্জন অবশ্য ছিল বেশ কয়েকটি। এর মধ্যে লিগে ৩৩ ম্যাচ খেলে ২৫ গোল করে জিতেছেন পিচিচি ট্রফি। কয়েকটা নতুন রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। অন্যদিকে রোনালদো জুভেন্টাসের হয়ে গত মৌসুমে সিরি আ জিতেছেন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩১ করে করেছেন এই পর্তুগিজ উইঙ্গার, যা আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আর নেইমার ফরাসি লিগ ওয়ানে তেমন বলার মতো করে দেখাতে পারেননি, এর জন্য অবশ্য ইনজুরি এবং করোনার কারণে আগেভাগেই পিএসজিকে লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণাকে দায়ী করতেই পারেন তিনি। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেকে কিছুটা মেলে ধরেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ফরাসি জায়ান্টদের ফাইনালে উঠার পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল।
এই ক'জন ছাড়া তালিকায় থাকাদের মধ্যে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে ভাবা হচ্ছে সাদিও মানে ও মোহামেদ সালাহ ও ভার্জিল ফন ডাইককে। ৩০ বছর পর লিভারপুলের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জেতার পেছনে এই তিনজনের বড় অবদান ছিল। তালিকায় থাকা রামোসও গত মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন। রিয়ালের লা লিগার শিরোপা জেতার পেছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার।
সেরা পুরুষ ফুটবলার
রবার্ট লেভানদোভস্কি (পোল্যান্ড/বায়ার্ন মিউনিখ)
লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/বার্সেলোনা)
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল/জুভেন্টাস)
নেইমার (ব্রাজিল/পিএসজি)
কেভিন ডে ব্রুইনে (বেলজিয়াম/ম্যানচেস্টার সিটি)
সাদিও মানে (সেনেগাল/লিভারপুল)
কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স/পিএসজি)
সার্জিও রামোস (স্পেন/রিয়াল মাদ্রিদ)
মোহামেদ সালাহ (মিশর/লিভারপুল)
ভার্জিল ফন ডাইক (নেদারল্যান্ডস/লিভারপুল)
থিয়াগো আলকান্তারা (স্পেন/বায়ার্ন মিউনিখ/লিভারপুল)
সেরা পুরুষ গোলরক্ষক
মানুয়েল নয়্যার (জার্মানি, বায়ার্ন মিউনিখ)
আলিসন বেকার (ব্রাজিল, লিভারপুল)
মার্ক আন্দ্রে-টের স্টেগেন (জার্মানি, বার্সেলোনা)
ইয়ান ওবলাক (স্লোভেনিয়া, অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ)
থিবো কোর্তোয়া (বেলজিয়াম, রিয়াল মাদ্রিদ)
সেরা কোচ (পুরুষ দল)
হান্স ডিটার ফ্লিক (জার্মানি, বায়ার্ন মিউনিখ)
ইয়ুর্গেন ক্লপ (জার্মানি, লিভারপুল)
জিনেদিন জিদান (ফ্রান্স, রিয়াল মাদ্রিদ)
মার্সেলো বিয়েলসা (আর্জেন্টিনা, লিডস ইউনাইটেড)
হুলেন লোপেতেগি (স্পেন, সেভিয়া)
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
এমএইচএম