ধর্ষণে জড়িত থাকার দায়ে সাজা হয়েছিল রবিনহোর। এই সাজার বিরুদ্ধে করা তার আবেদন বার বার খারিজ করে দেন আদালত।
সেই ২০১৭ সালেই রবিনহোকে দোষী সাব্যস্ত করে ইতালির আদালত। তার এক বন্ধু রিকার্ডোকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রবিনহোর সাজা হয় ৯ বছরের। এরপর থেকেই বার বার সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। প্রতিবার তার আবেদন খারিজ হয়েছে। শেষবারের আবেদন খারিজ হওয়ার পর আর আপিল করার সুযোগ রইলো না। অর্থাৎ সাজা তাকে খাটতেই হবে।
তবে রবিনহোর জন্য একটা সুবিধাও রাখা হয়েছে। চাইলে তিনি ব্রাজিলের জেলেও সাজা খাটতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ব্রাজিলের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবে তারা। যদিও ব্রাজিল সরকার এই প্রস্তাবে রাজি হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আবার এই মামলার আরও চার আসামী মামলা চলাকালীন ইতালি ছেড়ে তাদের নিজ দেশ ব্রাজিলে চলে যান। তাদের বিরুদ্ধেও ফের মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানা গেছে।
ঘটনা সেই ২০১৩ সালের। ওই বছরের ২২ জানুয়ারি মিলানে ২২ বছর বয়সী এক আলবেনিয়ান নারীকে গ্যাং রেপের অভিযোগ ওঠে রবিনহো ও তার পাঁচ বন্ধুর বিরুদ্ধে। তার জন্য ৯ বছরের শাস্তি দেওয়া হয় ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে। অবশ্য শুরু থেকেই নিজের দোষ অস্বীকার করে আসছেন ৩৮ বছর বয়সী তারকা। ধর্ষণের শিকার সেই মহিলা মাতাল অবস্থায় ছিলেন, এমন দাবি করেছিলেন রবিনহোর বাকি চার বন্ধু।
আদালত রবিনহোর আরেক ব্রাজিলিয়ান বন্ধু রিকার্ডো ফ্যালকাওয়েরও ৯ বছরের সাজা দেন। প্রথমবারের রায়েও দু’জনকে সমান শাস্তি দেওয়া হয়। রবিনহো ও তার বন্ধুকে ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঐ নারীকে ৬০ হাজার ইউরো দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল আদালত। তাদের শাস্তি ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রসিকিউটররা।
অপরাধ সংঘটনের সময় রবিনহো খেলতেন এসি মিলানে। ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পযর্ন্ত ১০৮ ম্যাচে মাঠে নেমে ২৫ গোল করেছিলেন তিনি। এরপর ইউরোপ ছেড়ে তিনি ঠিকানা গাড়েন চীনের ক্লাব গুয়াংজু এভারগ্রান্দেতে। ২০১৬ সালে তিনি যোগ দেন ব্রাজিলের ক্লাব অ্যাতলেটিকো মিনেইরোতে।
২০২০ সালের অক্টোবরে ফের রবিনহো ফিরে আসেন শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। তবে যোগ দেওয়ার মাত্র ৪ দিনের মাথায় জনরোষে পড়ে তার চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি। ঐ সময় ‘নারীদের প্রতি অসম্মান' করা খেলোয়াড়কে দলে নেওয়ায় সান্তোসের সঙ্গে চুক্তিও বাতিল করে এক স্পন্সর।
একসময় পেলের উত্তরসূরি ভাবা হতো রবিনহোকে। এমনকি ব্রাজিলের এখনকার সুপারস্টার ফুটবলার নেইমার জুনিয়রও তাকে আদর্শ মানতেন। মিলানে যোগ দেওয়ার আগে রবিনহো রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটিতেও খেলেছেন। তিনি ব্রাজিলের জার্সিতে ১০০ ম্যাচে করেছেন ২৮ গোল। কিন্তু মাঠের বাইরে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তার ক্যারিয়ার অনেক আগেই থামিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২২
এমএইচএম