ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন ব্ল্যাটার-প্লাতিনি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২২
দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন ব্ল্যাটার-প্লাতিনি

দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন ফিফার সাবেক প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার এবং উয়েফার সাবেক সভাপতি মিশেল প্লাতিনি। গত জুনে সুইজারল্যান্ডে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

বিচারে দুজনের বিরুদ্ধে 'অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি' বলে রায় দিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'বিসিবি' এমনটাই জানিয়েছে। এদিন আদালতে হাজির হওয়ার সময় ব্ল্যাটার বলেন, 'আমি নিষ্পাপ নই, কিন্তু এই (দুর্নীতির অভিযোগের) ব্যাপারে আমি অবশ্যই নির্দোষ। '

গত ৮ জুন ব্ল্যাটার ও প্লাতিনির উপর আনিত অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের জেল বা জরিমানা হতে পারতো। তবে কোনোরকম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অবশ্য বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন একসময়ে বিশ্ব ফুটবলের প্রভাবশালী এই দুই কর্মকর্তা।  

সুইস প্রসিকিউটরদের অভিযোগ ছিল, ২০১১ সালে প্লাতিনিকে বেআইনিভাবে ২০ লাখ ইউরো প্রদান করেছিলেন ব্লাটার। গত নভেম্বরে তাদের অভিযুক্ত করা হয়।

এর আগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ফিফার এথিক্স কমিটি। তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় দু'জনকেই ফুটবল সংক্রান্ত সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে আট বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে তা কমিয়ে ছয় বছর করা হয়।

১৯৯৮ থেকে ২০০২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে প্লাতিনি তার পরামর্শমূলক কার্যক্রম বন্ধ করার আট বছর পরে অর্থ চেয়ে আসছিলেন। ব্ল্যাটারের সংশ্লিষ্টতায় ফিফা ২০১১ সালের শুরুতে প্লাতিনিকে সেই অর্থ প্রদান করে। ফিফার তদন্তে এ লেনদেনে উভয়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও ক্ষমতা অপব্যবহার এবং নথি জালিয়াতির অভিযোগ তোলা হয়।

অভিযোগ থেকে মুক্তি মেলার পর প্লাতিনি বলেন, '৭ বছর পর মিথ্যাকে হারিয়ে সত্যের জয় হয়েছে। অবশেষে সুবিচার পেলাম। সত্যকে আলোর সামনে নিয়ে আসায় ট্রাইব্যুনালকে ধন্যবাদ। আমি অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমি প্রথম ম্যাচটা জিতে গেলাম। যারা আমাকে এভাবে ভুগিয়েছে তাদের আমি ছাড়বো না। সত্যের পথে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। '

ফুটবলার হিসেবে প্লাতিনির বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার ছিল। ৩ বার ব্যালন ডি'অরজয়ী এই সাবেক ফুটবলারের নেতৃত্বে ১৯৮৪ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নসশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল ফ্রান্স। ১৯৮৫ সালে জুভেন্টাসকে ইউরোপিয়ান কাপ জেতানোয় বড় ভূমিকা ছিল তার। এরপর ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচ হয়েছিলেন তিনি।  

২০০৭ সালে উয়েফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন প্লাতিনি। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর একই অভিযোগে তাকে ৮ বছরের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। পড়ে যা ৪ বছরে নেমে এসেছিল। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করলেও ২০২০ সালে সেই আপিল করে দেন আদালত। ফুটবলের মহাতারকার মতো উচ্চতা থেকে ধপ করে একদম মাটিতে পড়ে যাওয়ার ওই ঘটনার কথা মনে প্লাতিনি বলেন, 'বিশ্বাস করুন, বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি থেকে শয়তান সাব্যস্ত হওয়া খুবই কঠিন এক পরিস্থিতি। আর যদি না অনৈতিকভাবে হয় তাহলে কথাই নেই। ফিফা আমাকে বিশ্বাস করেনি, কিন্তু ট্রাইব্যুনাল করেছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় জয়। '

অন্যদিকে সুইস ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া সংগঠক ব্ল্যাটার ১৯৭৫ সালে ফিফায় যোগ দেন। ১৯৮১ সালে সংস্থার মহাসচিব ও ১৯৯৮ সালে পরিচালনা কমিটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। ১৭ বছর এই দায়িত্বে ছিলেন ব্লাটার। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শেষে তাকে ফুটবল থেকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়, পরে যা কমে ৬ বছর করা হয়। এরপর ২০২১ সালে বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগে আরও ছয় বছর যোগ হয়।

আজ রায় শোনার পর ব্ল্যাটার বলেন, 'আমি এখন অনেক নির্ভার। কারণ সাত বছরে অনেক চাপের মুখে ছিলাম। কারণ আমার বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। তবে এখন এটা শেষ হয়েছে এবং আমি তাতে খুশি। আমি আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্যও খুশি। এটাই ন্যায় বিচার। কিন্তু এটা আমার জয়। '

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২২
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।