সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে জলাতঙ্কের টিকা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এই কারণে কুকুর-বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
হাসপাতালে এসে টিকা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন অনেকে। জলাতঙ্কের টিকা না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা।
জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা না থাকায় যারা সামর্থ্যবান তারা বাইরে থেকে টিকা কিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর যেসব রোগীর সামর্থ্য নেই তারা টিকা না নিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আবার হাসপাতালে টিকা না পেয়ে অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন কবিরাজের কাছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক হয়, এমন প্রাণীর (কুকুর, বানর, শিয়াল, বেজি, বাঁদুড় ও বিড়াল) কামড়ে আক্রান্ত রোগী এসেছেন ৫২ জন। তাদের মধ্যে ৩৬জন পুরুষ, ১৬জন নারী। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী ৩০জন এবং ১৫ বছরের ওপরে রয়েছেন ২২জন। এ ছাড়া চলতি মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি এসেছেন কুকুরসহ অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর কামড়ে আহত হয়ে।
সূত্র আরও জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর একদিনে কুকুরে কামড়ানো ১৯জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক এআরভির (অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন) সরবরাহ নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
কুকুরের কামড়ে আহত শ্যামনগর উপজেলার হাঁটাছালা এলাকার সিনথিয়ার (২১) স্বজনরা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন না থাকায় তাদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনতে হয়েছে। এরপর হাসপাতাল থেকে সেবা দিয়েছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন, সরকারি ভ্যাকসিন পেলে তাদের জন্য উপকার হতো।
শনিবার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোদাড়া এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমানের ছেলে শাকিল হোসেন (১২) কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে টিকা পাননি। পরে ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কিনে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাকির হোসেন জানান, কুকুর ও বিড়ালে কামড়ে আহত হয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ জন রোগী হাসপাতালে এসে টিকা নিচ্ছেন। হাসপাতালে সাপ্লাই না থাকায় তারা রোগীদের চারজনের গ্রুপ করে দেন। এই চারজন টিকা কিনে আনলে তারা টিকা পুশ করে দেন। এতে রোগীদের খরচ কম হয়।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জিয়াউর রহমান বলেন, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সাপ্লাই না থাকায় সাময়িকভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। আমরা চাহিদা জানিয়েছি। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েও এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সরকারি ভ্যাকসিন সরবরাহ হলে যথারীতি বিনামূল্যে হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন আছে কি না সেটা টিএইচও জানে। হয়তো এখন সাপ্লাই নাই, তাই দিতে পারছে না। সাপ্লাই হলে দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৫
এএটি