কলকাতা: ভারতে বাড়ছে মাছ খাওয়ার প্রবণতা। সেই প্রবণতা মাছে ভাতের বাঙালিকেও পেছনে ফেলে দিচ্ছে।
এছাড়া ত্রিপুরা, উড়িষ্যার মানুষও মাছ খাওয়ার বিষয়ে পিছিয়ে নেই। তবে ওই রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের কোনো তথ্য নেই। কারণ রাজ্যের তরফে এ ধরনের রিপোর্ট বর্তমানে জমা পড়ে না। শেষ জমা পড়েছিল ২০১৪ সালে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ীও দেখা যাচ্ছে, মাছ খাওয়ার প্রতিযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষ লাক্ষাদ্বীপ, কেরল, গোয়ার পরেই চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
ভারতের আর্থিক গবেষণা সংস্থা ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাপ্লায়েড ইকোনমিক রিসার্চ’ (এনসিএইআর)-এর সমীক্ষা বলছে, ১০ বছরে ভারতের মাছ খাওয়ার পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়েছে। প্রতিবছরে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কম করে ১৩ কেজিরও বেশি মাছ খেয়ে থাকেন, যা ২০১১-১২ তে সরকারি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, বছরে মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণ ছিল মাত্র সাত কেজি। ১০ বছরে তা বেড়ে ১৩ কেজির ওপরে চলে গেছে।
সমীক্ষায় ভারতের ৫৬ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে, বাজারে নানা রকম মাছ মিললে মাছ খাওয়ার প্রবণতা ও পরিমাণ বেড়ে যায়। মাত্র ১৯ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে, মাছের দাম কম হলে মাছ খাওয়ার পরিমাণ বাড়ে। মাছ খাওয়ার সঙ্গেই বেড়েছে মাছ কেনায় ব্যয়। সমীক্ষা বলছে, ভারতে ১০ বছর আগে কোনো পরিবার হাজার রুপির বাজার করলে তার মধ্যে মাত্র ৭৬-৮৬ রুপি মাছের পেছনে খরচ হতো। বর্তমানে সমপরিমাণে অর্থে বাজার হলে তার মধ্যে ১৬৮ রুপি মাছ কিনতে ব্যয় করছেন।
সে সময় একটি পরিবার মাসে গড়ে আড়াই কেজি বা কিছুটা বেশি মাছ খেত। এখন তা প্রায় পাঁচ কেজিতে পৌঁছে গেছে। সমীক্ষায় ২৮ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে তাদের মাছ খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। সরকারি সংস্থা এনসিএইআর-এর তিন গবেষক সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, লক্ষ্মী জোশী ও নিজরা ডেকার তথ্য মতে, ভারতে অর্থবানদের একটা অংশ মাছের রক্ত, আঁশ, পানি পেরিয়ে মাছের বাজারে যেতে পছন্দ করেন না। উচ্চ আয় সম্পন্ন গোষ্ঠীর ৫৪ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য তারা মাছের বাজার এড়িয়ে চলেন। মধ্যবিত্তদের একাংশ আবার মাছ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখনও পুরোপুরি অবহিত নন। নিম্নবিত্ত মানুষের অনেকে কেনার ক্ষমতা নেই বলে মাছ কম খাচ্ছেন।
এনসিএইআর গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, ভারতে গত ১০ বছরে মাছ খাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও আন্তর্জাতিক মাপকাঠির তুলনায় দেশটিতে মাছ খাওয়ার পরিমাণ এখনও অনেক কম।
অপরদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন’ (এফএও) ও অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে বছরে মাথাপিছু ২০ দশমিক পাঁচ কেজি মাছ খাওয়া হয়, যা ২০৩১ সালে ২১ দশমিক চার কেজিতে চলে যাবে। আর্থিক বৃদ্ধি, মানুষের আয় বাড়লে মাছ খাওয়ার পরিমাণও বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৩
ভিএস/আরবি