ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

তৃণমূল যতদিন থাকবে বাংলায় ভাগাভাগি হতে দেব না: মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪
তৃণমূল যতদিন থাকবে বাংলায় ভাগাভাগি হতে দেব না: মমতা

কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যখন রামমন্দিরের আয়োজনে শান দিচ্ছে, মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমেছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলায় ধর্মীয় বিভাজনের কোনও স্থান নেই। কোনও মূল্যে তা হতে দেব না।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বাংলা শান্তির জায়গা, বাংলা কোনও ভেদাভেদ করে না, বাংলা মুসলমানদের মক্কা-মদিনা, বাংলা হিন্দুদের দক্ষিণেশ্বের-বেলুড়মঠ, বাংলা তফসিলিদের, বাংলা মতুয়াদের, বাংলা আদিবাসীদের।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণার জয়নগরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ওয়াদা করে যাচ্ছি, শপথ করে যাচ্ছি, আল্লাহর কসম তৃণমূল সরকার যতদিন থাকবে বাংলায় শিখ-খ্রিস্টান-তফসিলি-আদিবাসীদের ভাগাভাগি হতে দেব না।

বিজেপির বিরুদ্ধে বিভেদের রাজনীতি ও ইডি-সিবিআইয়ের (তদন্তকারী সংস্থা) ব্যবহারের অভিযোগ এনে মমতা বলেন, এনআরসির সময় দেখেছেন কী আন্দোলন আমরা করেছিলাম। তারপরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সিএএ'র সময় কী আন্দোলন করেছিলাম, দেখেছেন। এখন তাই অনেক অত্যাচার আমাদের লোকদের ওপর হচ্ছে। গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া চলছে যেন একটা এজেন্সির সরকার। ইঁদুর-চামচিকিরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আপনার অর্জিত পয়সা লুট করে নিয়ে যাবে।

লোকসভা ভোটের আগে ২২ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন হবে। তার নেপথ্যে পুরোদস্তুর রাজনীতি রয়েছে বলে মমতা মনে করছেন। এদিন (৯ জানুয়ারি) মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ৮ জানুয়ারি আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, রামমন্দির নিয়ে আপনার কী বক্তব্য? আমার যেন আর কোনও কাজ নেই। একটাই কাজ। আমি বললাম, ধর্ম যার যার নিজের, উৎসব কিন্তু সবার। আমি সেই উৎসবে বিশ্বাস করি, যে উৎসব সবাইকে নিয়ে চলে। একতার কথা বলে।

বিজেপির উদ্দেশে মমতা বলেছেন, ভোটের আগে আপনারা (বিজেপি) মন্দির উদ্বোধনের নামে গিমিক করছেন, করুন। আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তা বলে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে অবহেলা করা কারও কাজ নয়। এরপরই বলেছেন, আমি ওয়াদা করে যাচ্ছি, শপথ করে যাচ্ছি, আল্লাহর কসম তৃণমূল সরকার যতদিন থাকবে বাংলায় শিখ-খ্রিস্টান, তফসিলি-আদিবাসীদের ভাগাভাগি হতে দেব না।

নতুন বছর ভারতেরও ভোটের বছর। ফলে রাজ্যের প্রশাসনিক সভা থেকে ভোট অস্ত্রে শাণ দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল প্রধান। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বাংলায় মুসলিম ভোট শাসক দলের কাছে বড় ভরসার জায়গা। কিন্তু শুধু সেই ভোটে কিছুটা থাবা বসিয়ে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট। ফলে শুধু সংখ্যালঘু ভোটের ভরসায় থাকতে চান না মমতা। নেত্রী চাইছেন বাংলায় তামাম ধর্মনিরপেক্ষ ও বিজেপিবিরোধী হিন্দুদেরও সমর্থন পেতে। সেই কারণেই গঙ্গাসাগর মেলা (হিন্দুদের পুণ্যস্নান) আয়োজনে যত্নশীল হলেও বিজেপির রামমন্দির ফাঁদে জড়াতে চাইছেন না।

ফলে সোমবারের পর মঙ্গলবারও গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি দেখার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগরে প্রশাসনিক সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এ অংশে প্রায় সমসংখ্যক মুসলিম জনসংখ্যার বাস রয়েছে। এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক ঘোষণার তুলনায় এ ধরনের রাজনৈতিক ভাষণেই বেশি হাততালি পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।