কলকাতা: বাংলাদেশের বিরোধীতা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে চূর্ণী নদী হয়ে বাংলায় ময়লা আসছে। কেনো এ নিয়ে মোদি সরকার বাংলাদেশের সরকারকে বলছে না? আমি তো বাংলাদেশকে এ বিষয়ে নিজে অনেকবার বলেছি।
এর পরই মমতার অভিযোগ, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বাঙালি বিদ্বেষী। ওরা বাংলাকে পছন্দ করেনা। এমনকি যে সমস্ত অবাঙালি বহুকাল ধরে বাংলায় বাস করে আসছে, চিরদিন বাঙালিদের মত থাকে, তাদেরকেও বিজেপি পছন্দ করে না। বিজেপির একটাই কাজ, নেই কাজ তো খই ভাজ, শুধু মিথ্যা বলে বেড়াও। বাংলাদেশের সঙ্গে একাধিক বকেয়া দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নিয়ে বিজেপি সরকার নেতারা সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না। আর সেই কারণে বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবাসী ভুক্তভোগী। ভোট প্রচারণায় এমনই অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার(৪ মে) রাজ্যের নদীয়া জেলার রানাঘাটের লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারীর সমর্থনে স্থানীয় বীরনগরে এক নির্বাচনী প্রচারণা থেকে এসব বলেছেন মমতা। তিনি সেখানে চূর্ণী নদীতে ময়লাটা আবর্জনার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। মোদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে ইচ্ছা করেই এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন মমতা।
তবে মমতার এই অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এর আগেও একাধিক নির্বাচনী প্রচারণা কিংবা জনসভা থেকে কখনও আত্রেয়ী নদী উপর বাংলাদেশের তরফে বাঁধ দেওয়া, গঙ্গা নদীর ভাঙ্গন ইস্যুতে বিজেপি নেতাদের উদাসীন মনোভাবকেই দায়ী করেছেন তৃণমূল প্রধান। মমতার অভিযোগ, এরা এজেন্সির হাতে দেশটাকে পুরো বিক্রি করে দিয়েছে। জাতি, ধর্ম, মনুষত্ব, মা বোনেদের সম্মান বিক্রি করে দিয়েছে। তাই এদের মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না।
বসিরহাটের সন্দেশখালিতে নারীদের উপর যে অত্যাচার ও নির্যাতনের অভিযোগ বিজেপি তুলেছে; যা নিয়ে রাজ্যে তৃণমূল সরকারকে ক্রমাগত বিঁধে চলেছে মোদি, অমিত শাহ; তা নিয়ে মমতা বলেছেন, কয়েকদিন ধরে সন্দেশখালির সন্দেশ দেখাচ্ছিল, আজ বেরিয়ে গেছে, কলসি ফুটো হয়ে গেছে, আমি দুজন গণমাধ্যমের কর্মীর মুখে শুনলাম দাঙ্গা করবে, শয়ে শয়ে লোক মারবে আর নদীতে ভাসিয়ে দেবে।
ভারতের ১৮তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে(লোকসভা ভোট) গোটা দেশের ৪০০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে বিজেপি। তা নিয়েও কেন্দ্রের শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল নেত্রী। তার অভিমত, গত ১০ বছরে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কিচ্ছু করেনি। আসলে শূন্য কলসি বাজে বেশি। যেমন বিনা মেঘে বিদ্যুৎ চমকায়, তেমন প্রধানমন্ত্রীও মাঝে মাঝে আসেন, সবাইকে চমকায় ধমকায়, জেলে ভরে দেয়। আর বলে এবার ৪০০ পার করবে। আমি বলেছি ৪০০ পার নয়, তুমি এবার পগার পার হবে। নেত্রীর দাবি, এবার বিজেপির ফল ভালো হবে না।
পাশাপাশি মমতার অভিযোগ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) চালু হলে রাজ্যের দলিত, আদিবাসী, মুসলিম সংখ্যালঘু কারো না অস্তিত্ব থাকবে না। সব শেষ করে দেবে। এই দেশে শুধু মধু (নরেন্দ্র মোদি) আর বিধু (অমিত শাহ) থাকবে।
তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার বিষয়ে মমতা বলেছেন, যারা দিনের পর দিন আপনাদেরকে প্রতারিত করেছে, আপনাদের ঠকিয়েছে মিথ্যা কথা বলেছে, আপনাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তাদের একটি ভোটও দেবেন না। আমরাই দেশ গড়বো, ক্ষমতায় এসে আমরা এই সমস্ত আইন বাতিল করে দেবো। মমতার অভিযোগ, এরা (বিজেপি) গণতন্ত্রকে জেল বানিয়ে ফেলেছে। যা নিয়ে সারা বিশ্ব আজ মোদিকে ছিঃ ছিঃ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, ৫মে ২০২৪
ভিএস/এমএম