ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মমতার বিরোধিতা করে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে চিঠি দিলেন শুভেন্দু 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
মমতার বিরোধিতা করে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে চিঠি দিলেন শুভেন্দু 

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে স্মারক জমা দিয়েছেন রাজ্যটির বিধানসভা বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী।  

সোমবার (২৯ জুলাই) কলকাতার বাংলাদেশ মিশনে শুভেন্দুর সঙ্গে আসেন অগ্নিমিত্রা পাল, মালতি রাই, সুকুমার রাইসহ আরও ২০ জন বিধায়ক।

তারা বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসের হাতে তুলে দেন স্মারক ও একটি সিডি।

এ সময় মিশনের সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মিশন প্রাঙ্গণের বাংলাদেশ গ্যালারিতে ১৫ মিনিটের আলাপচারিতার পর শুভেন্দুর নেতৃত্বে বের হয়ে আসেন প্রতিনিধিদল।

এরপর সাংবাদিকদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে আমরা উপ-দূতাবাসে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ আমাদের পথ আটকেছে। এর প্রতিবাদ জানাই। এরপরই মমতার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি নেতা বলেন, রাষ্ট্রের বিষয় নিয়ে একটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলার এখতিয়ার নেই। দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ করছে। এর নিন্দা জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন সিএএ মাধ্যমের বাংলাদেশের শরণার্থীর আশ্রয়ের কথা বলছি, তা তিনি মানছেন না। অথচ নিজে মুখে বলছেন বাংলাদেশ থেকে কেউ আশ্রয় চাইলে দেব। এটা দ্বিচারিতা নয়? আসলে উনি এসব বলে জামায়াত-বিএনপি-রাজাকারের হাত শক্ত করতে চাইছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি মাস্টার মজিদকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল পার্কসার্কাম অঞ্চলে। বাংলাদেশে যারা তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে, ওনার দল তৃণমূল তাদের আশ্রয় দিয়েছে। মমতার আসল চেহারা সবাই দেখুক। তাই এ প্রতিবাদ। এসবের নিন্দা জানিয়ে গেলাম। আমরা বন্ধু রাষ্ট্রের বিরোধিতা চাই না। জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরোধিতা চাই না।

চিঠিতে কী দিয়েছেন সে বিষয়ে শুভেন্দু বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের নাক গলাতে চাই না। কিন্তু সেই আন্দোলনে ভারতবিরোধী স্লোগান উঠেছে। আমরা চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি যে তাদের চিহ্নিত করুন এবং যথাযথ শাস্তি দিন।

গত ২১ জুলাই এক অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশ নিয়ে কোনো কথা বলতে পারি না। তবে সেই দেশ থেকে এ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে কেউ আশ্রয় (শরণার্থী হয়ে) নিতে এলে আমি তাদের ফেরাবো না। এর চেয়ে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারবেন না। কারণ বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ। এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে ভারত সরকার বলবে বলেও উল্লেখ করেছিলে তিনি।

বাংলাদেশ নিয়ে মমতার ওই মন্তব্যের পরেই বিভ্রান্তি ছড়ায়। মমতার ওই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপি নেতারা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। এমনকি মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ বিষয়টি উত্থাপন করে বলেছিলেন, আমরা ভারত সরকারকে একটা নোট দিয়েছি।

এরপর বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার মমতাও পাল্টা কড়া জবাব দেন।

শুক্রবার বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভালো জানি। আমি সাতবারের সংসদ সদস্য ও দুইবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। বিদেশনীতি অন্য কারও চেয়ে ভালো জানি। তাদের আমাকে শেখানো উচিত না। বরং পরিবর্তিত ব্যবস্থা থেকে তাদেরই শেখা উচিত। আমি যেটা বলেছিলাম সেটা মানবিকতার দিকটি বিবেচনা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।