ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

চিকিৎসক ধর্ষণ: ২৭ আগস্ট কলকাতায় মমতার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৪
চিকিৎসক ধর্ষণ: ২৭ আগস্ট কলকাতায় মমতার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি

কলকাতা: কলকাতার আরজিকর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এমনিতেই ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্যবাসীর। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চললেও, বাংলায় থামছে না বিক্ষোভ।

তারই মধ্যে‘দফা এক,দাবি এক মমতার পদত্যাগ’এই স্লোগানে আন্দোলনের জোড় বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল বিজেপি। গত কয়েকদিনে গেরুয়া বাহিনীর আন্দোলনে একপ্রকার রণক্ষেত্র বাংলা।

প্রতিদিনই নানা কর্সূচিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলছে। গতকাল(২৩ আগস্ট) স্বাস্থ্য ভবন ঘেরাও কর্সূচির পর শুক্রবার বিজেপির বাংলার থানা ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছিল। সেখানেও পুলিশের সাথে ধস্তাধ্বস্তি। এমন সময় ডাক এলো রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন ঘেরাও কর্মসূচির।

রাজনৈতিক পতাকাবিহীন সেই কর্মসূচির যে সমর্থন বাড়ছে তা সামাজিক মাধ্যমের উত্তাপ জানান দিচ্ছে। আগামী ২৭ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। তাতে কোনও রুট বলা হয়নি। অর্থাৎ শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল আসতে পারে। আর এতেই পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়ছে।

গত ১৪ আগস্ট ‘রাত দখল কর্মসূচি’,সমাজিক মাধ্যমেই আহ্বান জানানো হয়েছিল। ওই রাতে রাজনৈতিক পতাকাবিহীন বাংলাজুড়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন সড়কের মোড়ে বড় জমায়েত হয়েছিল। সেই সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও বলেছিলেন, ১৪ তারিখের জমায়েত নেতৃত্ববিহীন ছিল। ফলে কোথায় কত লোকের জমায়েত হতে পারে তা আন্দাজ করা মুশকিল ছিল। ২৭ তারিখ সেরকই এক আহ্বানে আরও একবার কপাল ভাজ পড়েছে মমতা প্রশাসনের।  

প্রশাসনের উদ্বেগ, শান্তিপূর্ণ মিছিল বলে যা শুরু হবে, কোনও একটা উস্কানিতে তা অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। সেই কারণে এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। কোনো ভাবে যদি জমায়েত থামানো যায়। কিন্তু তাতে সম্মতি দিল না আদালত। শুক্রবার(২৩ আগস্ট) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন জানিয়ে দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হতেই পারে। অর্থাৎ এই প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে কোনও আপত্তি করল না হাইকোর্ট।  

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ছাত্র সমাজের মিছিলে অনুমতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে কোনওভাবেই আটকানো যাবে না, বা প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে আদালত এও বলেছিল, প্রয়োজনে রাজ্য সরকার অবশ্যই আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবে। তবে যতক্ষণ না তার প্রয়োজন পড়ছে, যতক্ষণ প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ হবে, ততক্ষণ কোনও বাধা দেওয়া যাবে না।

শুক্রবার(২৩ আগস্ট) কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে ছিল ওই মামলার শুনানি। দু'পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্য সরকারের করা মামলায় হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হল, সুপ্রিমকোর্টের গাইডলাইন মেনে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করা যেতে পারে।
 
বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টে শুনানির দ্বিতীয় দিনে এই প্রসঙ্গে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বাল বিচারপতিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২৭ তারিখ একটা প্রতিবাদ মিছিল রয়েছে। যদি কোনও প্রতিবাদ মিছিল হয়, তাহলে রাজ্য সরকারকে যেন বলা হয় কোন রুটে এই মিছিল হবে। মিছিলের একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর থাকতে হবে।

কপিস সিব্বাল আরও বলেছিলেন, ওরা পতাকা নিয়ে যায়, কিন্তু পতাকা খুলে নিলেই তো সেটা লাঠি হয়ে গেল। আমাদের কাছে ছবি আছে। তাই আদালতের কাছে অনুরোধ যে, মিছিলকারীদের একটা নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হোক, যেন তারা রাজ্য সরকারকে জানায় তা কোন পন্থায় কিভাবে মিছিল বা জমায়েত করবে। কিন্তু, দেশটির শীর্ষ আদালতও সিব্বালের কথায় কোনো সম্মতি দেয়নি। ফলে আগামী ২৭ তারিখ উত্তেজনা চরমে পৌঁছাতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।