এ উপলক্ষে শনিবার (০৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক’ বইমেলা প্রাঙ্গণে এসবিআই অডিটোরিয়ামে ‘বাংলাদেশের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইব্রাহিম হোসেন খান। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- কলকাতা বুক সেলার্স অ্যান্ড গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল সমিতির সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম।
সেমিনারে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের কথা তুলে ধরে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ছিটমহল সমস্যা মিটেছে, গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তিও হয়েছে, তাহলে তিস্তাসহ অন্যান্য সমস্যাগুলোও আলোচোনার মাধ্যমে মিটে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক বেশ ভালো, তাই আলোচোনাতেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বইমেলা দু’দেশের মানুষকে কাছে এনেছে। বইয়ের মধ্যমে এ বন্ধন দৃঢ় হোক সুদৃঢ় হোক। বাংলাদেশে কলকাতা লেখকদের বই পাওয়া গেলেও বাংলাদেশের লেখকদের বই পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় দুই বাংলার মৈত্রী সম্পর্কে তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশ আয়তনে ভারতের থেকে ছোটো হলেও আমাদের কাছে বড় আদরের। আমাদের সাবেক রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোনের মত স্নেহ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্যই বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে। তার মতে এ বইমেলা দুই বাংলাকে মিলিয়েছে। এক সময় বইয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমে তা বইমেলার মাধ্যমে ফিরে এসেছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলা একাডেমী-ঢাকার মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
সেমিনার শেষে বাংলাদেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। এসময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী অদিতি মহসিনসহ অন্যরা।
এবারে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে নির্মিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘আহসান মঞ্জিল’র আদলে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৪২ টি স্টল রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম বাংলা একাডেমি, নজরুল ইনিস্টিটিউট, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, মাওলা বাদ্রাস, অনন্যা প্রকাশনা।
বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সহযোগিতায় এবং কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের ব্যবস্থাপনায় এবারের বইমেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ৩০ জানুয়ারি কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বইমেলা চলবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত। বইমেলার এবারের থিম কান্ট্রি ফ্রান্স। ফ্রান্স ছাড়াও ২৯টি দেশ এবারের বই মেলায় অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুযারি, ০৪, ২০১৮
ভিএস/ওএইচ/