এর আগে সমাজ বিরোধীরা এ ধরনের বোমা তৈরি করেনি। সাধারণত জঙ্গি গোষ্ঠী বা নাশকতার সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন এই পদ্ধতিতে বোমা তৈরি করে।
নতুন এ বোমাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্লিসারিন টাইম বোমা’। গ্লিসারিন, চিনি ও সামান্য বিস্ফোরক মিশিয়ে অত্যন্ত অল্প খরচে তৈরি করা যায় বোমাটি। এ ধরনের বোমার চাহিদা পঞ্চায়েত ভোটের আগে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় তা তৈরি শুরু হয়েছে বলে খবর আছে তাদের কাছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ ২৪ পরগণাসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে কিছু বোমা উদ্ধার করা হয়। তদন্তকারী এক অফিসার জানান, অত্যন্ত কম খরচে এই বোমা তৈরি হচ্ছে। ইনজেকশনের অ্যাম্পুলের মধ্যে ভরা হচ্ছে গ্লিসারিন। সঙ্গে মেশানো হচ্ছে চিনি। এরপর অ্যাম্পুলের সামনে ফুটো করে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে একটি সরু প্লাস্টিকের পাইপ। বিস্ফোরক রাখা হচ্ছে একটি কৌটাতে। সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে গ্লিসারিন ভর্তি অ্যাম্পুলকে। প্লাস্টিকের পাইপ বেয়ে গ্লিসারিন চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে বিস্ফোরকের মধ্যে। এ জন্য বেশ কিছুটা সময় লাগছে। গ্লিসারিনের সঙ্গে চিনির রাসায়নিক বিক্রিয়া হওয়ার পর তা বিস্ফোরকের মধ্যে এসে পড়ে সহজেই বিস্ফোরণ ঘটছে। এই কায়দায় তৈরি বোমাকে দূর থেকে ছুড়ে মারার কোনো প্রয়োজন নেই। আগুন জ্বালানোরও প্রয়োজন নেই। কোনো জায়গায় বসিয়ে রেখে কেবল গ্লিসারিন চুঁইয়ে পড়ার ব্যবস্থা করে দিলে অনায়াসে বিস্ফোরণ ঘটবে।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, বোমা ছুড়তে গেলে একটা ঝুঁকি থেকে যায়। তা বহন করার সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। বোমা ফাটাতে গেলে হাতেনাতে ধরা পড়ার আশঙ্কাও থাকে। সেখানে এই পদ্ধতিতে তৈরি বোমা অনেক নিরাপদ। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আগে থেকে সবার নজর এড়িয়ে বসিয়ে রেখে এলেই যথেষ্ট। এর ফলে পুলিশের পক্ষেও জানা সম্ভব নয়, কে বা কারা এই বোমা রেখে গেলো। এতে অপরাধীদের ধরতে পুলিশকে বেগ পেতে হবে।
পুলিশের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে গ্রামে ভয় দেখাতে এ ধরনের বোমার চাহিদা বাড়বে। আর এ কারণেই গ্লিসারিন বোমা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তা আটকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ৩ এপ্রিল, ২০১৮
ভিএস/আরআর