তিনি বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, পরস্পরের বিকাশে সহযোগিতা করছে তা অন্যদের জন্যও একটি শিক্ষা, একটি উদাহরণ। শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছেন, তা অর্জনে ভারতের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
শুক্রবার (২৫ মে) শন্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আশ্বাস দেন মোদী।
নরেন্দ্র মোদী বলেন, শেখ হাসিনার পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার ধারাবাহিকতার প্রতীক। আমাদের লক্ষ্য এক এবং সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর পদ্ধতিও এক। বাংলাদেশ এবং ভারতের অগ্রযাত্রার সূত্র একটি সুন্দর মালার মতো।
আমাদের সামনে এক ধ্রুব সত্য এসেছে, তা হলো প্রগতি, সমৃদ্ধি, শান্তি ও ঐক্যের জন্য দরকার ভারত এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্ব। পারস্পরিক সহযোগিতা। এ সহযোগিতার বিকাশ কেবল দুই পক্ষের কারণেই হয়েছে তা নয়, বিমসটেকের মতো একটি প্লাটফর্মও আমাদের সহযোগিতা, প্রগতি ও সংযোগকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যোগ করেন মোদী।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক হয়ে থাকবে। অনেক বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের বিশেষ করে যুব সমাজের আকাঙ্ক্ষা পূরণে একসঙ্গে এগিয়ে চলার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের স্বর্ণযুগ রচিত হচ্ছে। এ সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার স্থল সীমানার মতো জটিল সমস্যা সমাধান হয়েছে, যা এক সময় অসম্ভব বলে মনে করা হতো।
বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ভারতের পার্লামেন্টে ভারতের প্রতিটি দলের সংসদ সদস্যরা মিলে, দল-মত নির্বিশেষে এক হয়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিলটি পাস করে দিলো। অনেক দেশে ছিটমহল বিনিময় নিয়ে যুদ্ধ বেধে আছে। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে, শান্তিপূর্ণভাবে ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে, আনন্দঘন পরিবেশে আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি। সত্যি কথা বলতে কি, আমি এতো আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম, চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। মনে হয়েছিলো একাত্তর সালে যেভাবে আমরা ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম, আবার একবার দেখলাম, ঠিকই আমাদের প্রতিবেশী আমাদের বড় বন্ধু পাশে দাঁড়াল।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে সে দেশের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা জানেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় নিয়েছে, মানবিক কারণে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তারা দ্রুত তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক- আমরা সেটাই চাই। এজন্য মিয়ানমারকে সবাই চাপ দিন, চাপ অব্যাহত রাখুন।
এ সময় বাংলাদেশে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরও ভারতে বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারত সফরে শেখ হাসিনার আবাসস্থল কলকাতার তাজ বেঙ্গল হোটেলে কলকাতার ব্যবসায়ী নেতারা দেখা করতে এলে এ আহ্বান তিনি।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদর ব্রিফ করে এসব তথ্য জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৮
এসকে/এসআই