রোববার (৮ জুলাই) নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত মেলায় ভিন্নস্বাদের পর্যটনের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছিল বাংলাদেশ।
মেলায় সেরা ইনোভেটিভ আইডিয়ায় ট্যুরিজিমের মঞ্চ সাজানোর জন্য সেরা অ্যাওয়ার্ড জিতলো বাংলাদেশ পর্যটন বিভাগ।
প্যাভিলিয়ন সাজানো হয়েছিল দিনাজপুরের বিখ্যাত কান্তজীর মন্দিরের আদলে। এ প্যাভিলিয়নে ১৫টি বেসরকারি স্টল ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের ট্যুরিজম বোর্ড ও একটি সরকারি ট্যুরিজম করপোরেশনসহ ১৭টি স্টল স্থান পেয়েছিল। এবারের পর্যটন মেলায় কলকাতাবাসীর কাছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউএসপি হলো 'একই ভাষায়, একইগন্ধে বিদেশ ভ্রমণ। ' বুকিংও পেয়েছে প্রচুর। পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে ভারতে আসা। নতুন প্রজন্মকে সেই স্বাদ পাওয়ানোর ইচ্ছা অনেকের থাকলেও, সহযোগিতা পাচ্ছিলো না। সেই সুবিধা করে দিল বাংলাদেশ থেকে আসা ট্যুর কোম্পানিগুলো। একটি বার হলেও বাংলাদেশ দেখতে চাই। তাই আর দেরি না করে পরিকল্পনা করলো একাধিক কলকাতার মধ্যবিত্ত পরিবার।
বাংলাদেশ পর্যটন বিভাগের মার্কেটিং ডিভিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর শাহজাহান কবির বাংলানিউজকে বলেন, আমরা টিটিএফের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের এই সম্মানে ভূষিত করার জন্য। একটু ভিন্ন স্বাদে স্টলকে সাজিয়ে ছিলাম আমরা। দর্শনার্থীরা অনেকে মনে করছিলেন আমরা মন্দির প্রাঙ্গণে বসে আছি। আসলে কলকাতা ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের কাছে আমরা বাংলাদেশের বাঙালিরা সত্যিকার অর্থে ঐতিহ্য তুলে ধরতে পেরেছি। এটা আমাদের গর্ব। এ জার্নি ট্যুরিজিম ব্যবসা তিনদিনের নয়। যারা খোঁজখবর নিয়েছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে হবে।
আরেক ট্যুর কোম্পানি 'ওয়েলকাম বাংলাদেশের সিইও ডালটন জহির বলেন, বাংলাদেশ ভ্রমণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন নতুন প্রজন্মরা। তবে বেশি আগ্রহ প্রবীণদের। এই মাত্র একটা গ্রুপ বুক করলাম ১৫ জনের। তাদের সবার বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। আগস্টে ৩০ তারিখ তারা বাংলাদেশ বেড়াতে যাবেন। আসলে আমাদের সবটাই কিন্তু এক, বলতে পারেন প্রকারভেদটা অনেকটা দুই বাড়ির রান্নার মতো। রান্না একই মসলা পড়লেও যেমন স্বাদটা হয় ভিন্ন। ঠিক এরকই সম্পর্ক পশ্চিমবাংলা আর বাংলাদেশের মধ্যে। এর থেকে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই বলে আমি মনে করি। আর বাড়তি পাওনা বলতে শেষ দিন খুবই ভালো লেগেছে ইনোভেটিভ আইডিয়ার জন্য পুরস্কার জেতায়।
টিটিএফ মেলার অন্যতম কর্মকর্তা সঞ্জয় আগরওয়াল পুরস্কার বিতরণীর পর বলেন, আপনাদের মাধ্যমে ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশকে। তাদের যোগ্যতায় তারা সেরা হয়েছেন। আমার মনে হয় নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার মতো একবার অন-এরাইভাল-ভিসা শুরু হলে অন্যান্য দেশের ট্যুরিস্টদের ওপর আমাদের আর নির্ভর করতে হবে না। বাংলাদেশই আমাদের কোটা পূর্ণ করে দেবে। আমরা সেদিনের আশায় আছি। আর বাংলাদেশ যতবারই আমাদের মেলায় পার্টিসিপেট করে ততবার আমরা তাদের বাড়তি গুরুত্ব দেই। সব বাংলাদেশি পার্টিসিপেটারকে ধন্যবাদ জানাই।
শুক্রবার(৬ জুলাই) টিটিএফের মেলা শুরু হয়। এবারের মেলায় ৪৩০টি স্টলে ভারতের ২৮টি রাজ্য এবং ১৩টি দেশ অংশ নিয়েছিল। বিদেশি দেশগুলোর মধ্যে একটু আকর্ষণীয় করে প্যাভিলিয়ন সাজিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও রয়েছে নেপাল, থাইল্যান্ড, ইউএই (আরব আমিরাত), শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভুটান, চীন, ফিনল্যান্ড, মিয়ানমার এবং সিঙ্গাপুর প্যাভিলিয়ন। গোটা ভারত থেকে মোট ২৮টি রাজ্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে মেলায় অংশগ্রহণ করেছিল। হিমাচল প্রদেশ, পশ্চিমবাংলা, রাজস্থান, উড়িষ্যা, গোয়া, গুজরাট, কেরল এসব রাজ্য প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে নিয়ে বসেছে। এছাড়া ছোট ছোট স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, কাশ্মীর, তামিলনাড়ু, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা ইত্যাদি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
ভিএস/এএটি