ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বিজেপির বিক্ষোভে ভাষণ শেষ করতে পারলেন না রাজ্যপাল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২১
বিজেপির বিক্ষোভে ভাষণ শেষ করতে পারলেন না রাজ্যপাল

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে মমতার তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই শুক্রবার (২ জুলাই) ছিল বিধানসভা অধিবেশন। অধিবেশন শুরু করার কথা ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের।

এদিন বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপাল মমতার মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ভাষণ পাঠ করবেন কিনা, তা নিয়ে ছিল জোর জল্পনা। কিন্তু অধিবেশনের শুরুতেই বিজেপির হুলস্থূল ঘটনায় ভাষণ সম্পূর্ণ শেষ না করেই বেরিয়ে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। জানা গেছে, ১৪ পাতার ভাষণের মাত্র কয়েকটি লাইনই পড়তে পেরেছেন তিনি।

এদিন টানটান উত্তেজনার মধ্যেই রাজ্যপাল বিধানসভায় প্রবেশ করেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর ভারতের সংবিধান স্রষ্টা আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদানের মুহূর্তে ধনকড়-মমতাকে কথা বলতেও দেখা গিয়েছিল। এরপরই রাজ্যপালকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভার কক্ষে। তারপরই বক্তব্য পাঠ করতে শুরু করেন রাজ্যপাল।

ঠিক সেই সময়ই রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার ছবি হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির বিধায়করা। দেওয়া হয় ভারত মাতা কি জয় স্লোগানও। নেতৃত্ব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই মাত্র কয়েক লাইন বক্তব্য পাঠ করেই থেমে যান জগদীপ ধনকড়। হাত জোড় করে বক্তব্য শেষ করদে দেওয়ার অনুরোধও জানান তিনি। কিন্তু শেষমেষ বেরিয়ে আসেন বিধানসভা থেকে।

নজিরবিহীন এমন ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ইতিহাসে এর আগে কখনও ঘটেনি। অতীতে রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিধায়করা। কিন্তু কোনকালেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে ভাষণ থামাতে হয়নি। এবার সেটাই হলো।

জানা যায়, দুপুর তিনটে পর্যন্ত বিধানসভায় থাকার কথা থাকলেও তার ৫০ মিনিট আগেই ফিরে যান রাজ্যপাল। তবে রীতি মেনে রাজ্যপালকে বিদায় দেন বিধানসভার অধ্যক্ষ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি বিধায়কদের চিৎকার-চেঁচামেচিতেই ভাষণ দিতে পারেননি রাজ্যপাল। তবে রাজ্যপাল কেন ভাষণ শেষের আগেই বিধানসভা ত্যাগ করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, এর জবাব মাননীয় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়জি দিতে পারবেন। আমাদের অর্থাৎ বিরোধীদের প্রতিবাদের বিষয় ছিল রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা। কিন্তু রাজ্যপালের ভাষণে এদিন বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসার উল্লেখ ছিল না। উল্টো বলা হয়েছে যে, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার। এই ভাষণের কোনো সারবত্তা নেই।

এরপরই হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু বলেছেন, আগামী দিনেও বিধানসভায় ভোট পরবর্তী হিংসা, রাজ্যে ভুয়া ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়েও বিক্ষোভ হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মমতার মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ভাষণ রাজ্যপাল যাতে পাঠ না করতে পারেন তাই নিয়েই বিজেপি বিধায়কদের তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।