ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব

এ বছর হচ্ছে না ভারত-রাশিয়া বার্ষিক বৈঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
এ বছর হচ্ছে না ভারত-রাশিয়া বার্ষিক বৈঠক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন -ফাইল ছবি

প্রত্যেক বছরের মতো ভারত-রাশিয়া বার্ষিক বৈঠক এবার হচ্ছে না। নিয়মমাফিক দুই দেশের এই বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে এ বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মস্কোর যাওয়ার কথা ছিল।

তবে এ বছর মোদি রাশিয়া যাবেন না এমনটাই জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা

যদিও এজন্য সময়াভাবের কথাই বলা হচ্ছে তবে, কূটনৈতিক মহলের মতে এই বৈঠকটি থেকে আপাতত বিরত থাকার কারণ ভারতের ‘ভারসাম্যের’ কূটনীতির।

গত বছর (২০২১) ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মাস দুয়েক আগে নয়াদিল্লি সফর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তখন অবশ্য ওই ইউক্রেনে রুশ হামলার আঁচ বা আভাসও পাওয়া যায়নি।

গত সেপ্টেম্বরে সমরখন্দে এসসিওর শীর্ষ সম্মেলনে পুতিনের মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদি। সে সময় রুশ নেতাকে মোদি বলেছিলেন, ‘এই সময়টা যুদ্ধের সময় নয়। ’ তার সেই মন্তব্য লুফে নিয়েছিলআমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্ব। বিভিন্ন মঞ্চে মোদি তথা ভারতের এই অবস্থানের প্রশংসা করাই শুধু নয়, সাম্প্রতিক জি ২০-র বালি সম্মেলনের যৌথ বিবৃতিতে মোদীর এই অবস্থানের হুবহু প্রতিফলনও দেখা গিয়েছে।

ভারত যুদ্ধ এবং হিংসা বন্ধের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত সস্তায় অশোধিত তেল কিনেছে মস্কোর কাছ থেকে। এখনো পর্যন্ত এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তথা জি-৭ গোষ্ঠীর নিষেধাজ্ঞাকে আমলে নেয়নি ভারত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বারবার বলেছেন, ইউরোপ এক সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে যে তেল কেনে, ভারত তা কেনে এক মাসে। তাছাড়া ভারতের মতো দেশে জ্বালানির চাহিদা এতটাই  বেশি যে, সে ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা নয়াদিল্লির অগ্রাধিকার। শুধু জ্বালানিই নয়, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার রয়েছে অর্ধ শতাব্দী পুরাতন সামরিক সম্পর্ক। আর তাই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একাধিকবার রাশিয়াবিরোধী ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে মোদী সরকার।


কূটনৈতিকদের মতে, ভারত এটা ভাল করেই জানে, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বহাল রেখে জ্বালানি এবং সামরিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে যথেষ্ট কৌশলী হতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে এসসিওর দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত পার্শ্ববৈঠক করা এক বিষয়, কিন্তু শীর্ষ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করা অন্য। সেখানে যৌথ বিবৃতির প্রশ্ন আসবে। ভারতের দায় থাকবে বিশ্বজোড়া খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের সঙ্কটকে কড়া ভাষায় মস্কোর মাটিতে দাঁড়িয়ে তুলে ধরা। যৌথ বিবৃতিতে যুদ্ধবিরোধী বক্তব্যকে প্রাঞ্জল এবং কড়া ভাষায় বিবৃত করা।

কিন্তু এসব করতে যাওয়াটা নয়াদিল্লির কাছে যথেষ্ট বিড়ম্বনার। রাশিয়াকে প্রতিপদে প্রয়োজন নয়াদিল্লির। তাই পরিস্থিতির স্পর্শকাতরতাকে বিচার করে আপাতত এই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার ভাবনাচিন্তাই করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।