চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ইরান ও সৌদি আরব। বেইজিংয়ে বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসাদ বিন মোহাম্মদ আল আইবান এবং ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান আলী শামখানি।
এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন চীনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমানে দেশটির সেন্ট্রাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিশনের পরিচালক ওয়াং ই।
শুক্রবার (১০ মার্চ) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর সৌদি আরব ও ইরান সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে একমত হয়।
এর ফলে উভয় দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে। সেই সঙ্গে দুই মাসের মধ্যে দুই দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাস খুলবে।
সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে বেইজিংয়ের ভূমিকার প্রশংসা করেছে সৌদি আরব ও ইরান। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। অন্যদিকে ইরান ও চীন এই দুই দেশের সঙ্গেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন আছে। আবার ইয়েমেনে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, সেখানে ইরান ও সৌদি আরব পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়।
২০১৬ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর, তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। তারপর দুই দেশের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে।
বিবিসির সংবাদদাতা ফ্র্যাংক গার্ডনার জানিয়েছেন, বেইজিংয়ে মাত্র চারদিনের এক সমঝোতা আলোচনায় গত সাত বছরের হিমশীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলানো সম্ভব হয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে চীন সরকার।
তবে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের হলেও তাদের নীতিগত অবস্থানে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম খোলা রাখাটাই এই সমঝোতার মুখ্য উদ্দেশ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়েমেন যুদ্ধ দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে বিরাট ফাটল তৈরি করেছে। আবার সৌদি আরবে শিয়া মুসলিমদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়, সেটা নিয়েও রয়েছে বিরোধ। সৌদি আরবের অবকাঠামোর ওপর সম্প্রতি অনেকগুলো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। এসব হামলার পেছনে ইরানের সামরিক বাহিনীর ভূমিকা আছে বলে ধারণা করা হয়।
সূত্র: বিবিসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
এমজেএফ