১২ বছরের মধ্যে প্রথমবার এশিয়ায় আমেরিকার দুই বৃহত্তম মিত্রের নেতা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য একে অপরের দেশ সফর করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্র প্রসারিত করেছেন।
জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভেঙে পড়া কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে উভয় দেশ জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা রোববার (৭ মে) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়ুলের সঙ্গে সিউলে সাক্ষাৎ করেছেন। এর আগে মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট টোকিও সফর করেন।
সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের নেতা আলোচনার জন্য তাদের ‘শাটল কূটনীতির’ পুনরুজ্জীবনকে চিহ্নিত করেছেন। তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে এমন সমস্যাগুলো নিয়ে তারা কাজ করতে সম্মত হন।
চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক উত্থান, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়া ও ওয়াশিংটনের সহযোগিতা কামনা করছে টোকিও। এমন উদ্দেশ্য নিয়েই জাপানের প্রধানমন্ত্রীর এ সিউল সফর।
বাইডেন (যুক্তরাষ্ট্র) প্রশাসন উভয় দেশের এ প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে।
কিশিদার সঙ্গে বৈঠকে ইয়ুন সুক তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, শাটল কূটনীতি পুনরুদ্ধার করতে ১২ বছর লেগেছিল, কিন্তু আমাদের দুজনের পারস্পরিক বিনিময় পরিচালনা করতে দুই মাসেরও কম সময় লাগে। আমি বিশ্বাস করি দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।
ইযুনকে স্বাগত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে কিশিদা বলেন, মার্চ মাসে তারা বৈঠকে মিলিত হওয়ার পর থেকে দুই দেশ সম্পর্কের দিক থেকে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব বাড়িয়েছে। দুই দেশের নেতার সফরের উদ্দেশ্য ছিল আন্তরিক সম্পর্কের উন্নয়ন। রাজনৈতিক প্রচেষ্টায় এ সম্পর্কের আরও উন্নতি হতে পারে।
১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত কোরীয় উপদ্বীপে জাপানের ঔপনিবেশিক শাসন ছিল। সেই উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরি সম্পর্ক বিরাজমান ছিল।
মার্চে ইয়ুন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি কোম্পানিতে কাজ করতে বাধ্য করা শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিরোধ সমাধানের জন্য একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব ঘোষণা করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি কোম্পানিতে কাজ করতে বাধ্য করা শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিরোধ সমাধানের জন্য একটি যুগান্তকারী প্রস্তাব ঘোষণা করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ জনসাধারণ ইয়ুনের এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন, কিন্তু তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে ভবিষ্যৎ-ভিত্তিক সম্পর্ক গড়তে চান।
দক্ষিণ কোরিয়ায় অবতরণ করার পর কিশিদা ও তার স্ত্রী ইউকো সিউলের একটি জাতীয় কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
ইয়ুন ও ফার্স্ট লেডি কিম কিওন হি তাদের অতিথিদের লাল গালিচায় অভ্যর্থনা জানান। পরে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের বাগানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন অতিথিরা।
রোববার সন্ধ্যায় দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।
কিশিদা হিরোশিমায় সাতটি দেশের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ইয়ুনকে আমন্ত্রণ জানান। এ মাসের শেষের দিকে এ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
এ দুই নেতা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক করবেন বলে আশা করছেন। বৈঠকে তিন দেশ কীভাবে তাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রসারিত করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
জেএইচ