পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বিষাক্ত ধোঁয়াশার কারণে হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। জনস্বাস্থ্যের দিক বিবেচনায় সেখানের বেশ কয়েকটি শহরের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরে এ দূষণ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। লাহোরসহ তিনটি শহরে বেশ কিছু কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। এসব শহরের স্কুল, কলেজ, অফিস, শপিংমল এবং পার্ক আগামী রোববার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকার।
বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে লাহোরের বায়ুমানের সূচক (বাতাসে সূক্ষ্ম কণার মাত্রা একিউআই) ৪০০ এর কাছাকাছি চলে গেছে, যা গুরুতর বায়ুদূষণ হিসেবে বিবেচিত। কারণ, ১০০ বা তার নিচে একিউআই মাত্রাকে সাধারণত সন্তোষজনক বলে মনে করা হয়।
লাহোরের কয়েকজন বাসিন্দা বিবিসিকে বলেছেন, প্রায়শই তাদের এ অঞ্চলের বাতাস বিষাক্ত হয়ে ওঠে। এটি সম্প্রতি ঘন ঘন ঘটছে। যা তাদের স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কাজকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
লাহোরের এক বিক্রয়কর্মী আমির হামজা বলেন, এই বিষাক্ত পরিবেশই এখন আমাদের জীবনের সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি আমার স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। কারণ, আমি বাজারের পণ্যের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাই, সারাদিনই মোটরসাইকেলে এদিক-ওদিক ঘুরি। ফলে এ বায়ুদূষণের কারণে আমার চোখ লাল এবং ব্যথিত হয়। আমি প্রায়শই অসুস্থ থাকি, যা আমার কাজে প্রভাব ফেলে। এই মুহূর্তে সর্দি, গলা ব্যথা এবং কাশিতে ভুগছি। ’
লাহোরের আরেক বাসিন্দা সারাহ জিশান বলেন, দূষণের কারণে আমার দেড় বছর বয়সী মেয়ের মুখের ভেতরে ফোসকা পড়েছে। সে কিছুই গিলতে পারছে না।
স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, বিষাক্ত ধোঁয়াশার এরূপ ক্রমাগত প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের ক্ষতির কারণ হতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের ক্যান্সার।
কিছু বিশেষজ্ঞের দাবি, শীতকালের জন্য জমি প্রস্তুত করতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এ বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের পরিবেশবিদ রাফি আলম বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়াশা মোকাবিলায় সরকারি নীতিগুলো তাড়াহুড়ো করে তৈরি করা হয়েছে, যার কোনো লাভ নেই। যতক্ষণ না আপনি একটি সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে চিনবেন, আপনি কীভাবে এর সমাধান করবেন? পানি ছেটালে বা সপ্তাহে তিন দিন স্কুল বন্ধ রাখলে কি ধোঁয়াশা সমস্যার সমাধান হবে?
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
এসএএইচ