সম্প্রতি প্যারিসের ইতিহাসবিদ জে বি পি মোরের একটি গোপন ফরাসি নথি নিয়ে নতুন করে বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। রোববার (১৬ জুলাই) দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য দিয়েছে।
নেতাজির এই মৃত্যু রহস্য খুঁজতে তিন তিনবার কমিশন নিয়োগ দিয়েছে ভারতীয় সরকার। এসব কমিশন প্রতিবার প্রতিবেদন দিলেও গোলক ধাঁধার বৃত্তেই থেকে গেছে নেতাজির মৃত্যু রহস্য!
১৯৫৬ সালের শাহনেওয়াজ কমিটি ও ১৯৭০ সালের খোসলা কমিটি প্রতিবেদন জানায়, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট জাপান অধিকৃত তাইওয়ানের তাইপের তাইহাকু বিমানবন্দরে প্লেন দুর্ঘটনায় মারা যান নেতাজি।
তবে সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে মুখার্জি কমিটির রিপোর্টে জানানো হয়, বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়নি। যদিও ওই কমিটির প্রতিবেদন আমলে নেয়নি সরকার, বরং তা প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া হয়েছে।
তবে থেমে থাকেননি পণ্ডিতরা; ঘটনার গভীরে গিয়ে সত্য অনুসন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এরমধ্যেই ফরাসি ঐতিহাসিক জেবিপি মোরের নথি তারই প্রমাণ দিল।
তিনি দাবি করেছেন, গবেষণায় বের হয়ে এসেছে সুভাষ চন্দ্র বসু প্লেণ দুর্ঘটনায় মারা যাননি। তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বেঁচেছিলেন।
তৎকালীন ফ্রান্স সরকারের একটি গোপন নথিতে বলা হয়, ১১ ডিসেম্বর, ১৯৪৭ সাল। ওই প্রতিবেদনটিতে সেই সময় নেতাজি কোথায় ছিলেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ ফ্রান্স সরকারের মতে, ১৯৪৭ সালের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেতাজি জীবিত ছিলেন।
‘প্লেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়নি। ’ তবে ওই সময় জীবিত অবস্থায় কোথায় ছিলেন তাও উল্লেখ নেই প্রতিবেদনে।
এদিকে ব্রিটিশ ও জাপানও ঘোষণা দিয়েছে, প্লেন দুর্ঘটনাতেই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল। তবে এসব কথায় সব সময়ই নীরব থেকেছে ফ্রান্স। ওই সময়টায় ভিয়েতনাম ছিল ফ্রেঞ্চ কলোনি। তাই ইতিহাসবিদ মোরের এই গবেষণাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
মোর বলেন, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্টে জাপানের পরাজয়ের পর আত্মসমর্পণের পরপরই ফরাসি সৈন্যরা সায়গুনে (হো চি মিন সিটি) এসেছিল এবং ব্রিটিশ সৈন্যদের নিয়ে সায়গুনের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা প্লেন দুর্ঘটনায় বোসের (নেতাজি) মৃত্যুর সরাসরি হিসেব রাখেননি। তারা এই তত্ত্বটি সমর্থন করেনি যে , এই দুর্ঘটনায় বোস মারা গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
এমএ/