ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পত্রিকা বিক্রি ১০ ভাগ কমে গেল সান-মিরর-ডেইলি স্টারের!  

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
পত্রিকা বিক্রি ১০ ভাগ কমে গেল সান-মিরর-ডেইলি স্টারের!   দ্য সান, ডেইলি মিরর ও ডেইলি স্টারের প্রচ্ছদ।

সংবাদমাধ্যমে আগামীর নেতৃত্বে অনলাইনই, প্রযুক্তিবিদ-সাংবাদিকরা এ কথা বলে আসছেন চলতি শতকের প্রথম থেকেই। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর জয়জয়কারের খবরে কেবল পত্রিকা-সাময়িকীগুলোর ছাপা সংস্করণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা আসছে।

এরমধ্যে কিছু কিছু পত্রিকা অবশ্য অস্তিত্ব টেকাতে অনলাইনমুখী হলেও ‘ঐতিহ্য’ ধরে রাখতে ছাপা সংস্করণও চালিয়ে যাচ্ছিল।  সেই দিনও বুঝি শেষ হতে চলেছে।

অন্তত ব্রিটিশ পত্রিকাপাড়ার সবশেষ খবর তা-ই বলছে। সেখানকার দৈনিকগুলোতে চলছে ছাপা সংস্করণের ক্রেতা হারানোর দুর্দশা। ছাপা পত্রিকার বিক্রি একেবারেই নিম্নমুখী। গত একবছরে গড়ে ১০ শতাংশেরও বেশি হারে বিক্রি কমে গেছে নামকরা ব্রিটিশ দৈনিকগুলোর।
 
ছাপা সংস্করণ নিয়ে সংকটে পড়ে যাওয়া সংবাদমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে দ্য সান, ডেইলি মিরর, ডেইলি স্টার, সানডে মিরর, দ্য গার্ডিয়ান, ডেইলি টেলিগ্রাফ, ডেইলি মেইলসহ অনেক প্রভাবশালী দৈনিকও।

সমীক্ষা মতে, গত বছরের জুনের পর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ডেইলি স্টারই সবচেয়ে বেশি ক্রেতা হারিয়েছে। কর্মদিবসগুলোতে তাদের পত্রিকা বিক্রি ১৮ শতাংশ কম হয়েছে আগের বছরের তুলনায়। আর ছুটির দিন রোববার এই বিক্রি কমেছে আরও, ২৬ শতাংশ। যদিও নিম্নমুখী বিক্রির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গত বছর তারা মূল্যছাড় পর্যন্ত দিয়েছিল।

এই একইসময়ে সানডে মিররের ছাপা পত্রিকা বিক্রি কমেছে গড়ে ২০ শতাংশ, ডেইলি মিররের ১৭ শতাংশ এবং দ্য সানের ১০.৫ শতাংশ।  এক হাতে চায়ের কাপ নিয়ে আরেক হাতে স্মার্টফোনে পত্রিকা? নাকি চা পাশে রেখে দুই হাতে পত্রিকা পড়বেন?এছাড়া দ্য গার্ডিয়ানের ছাপা পত্রিকা বিক্রি কমেছে ৭.৪ শতাংশ, ডেইলি মেইলের ৬.৯৭ শতাংশ, দ্য সান অন সানডের ৯.০৮ শতাংশ, দ্য  মেইল অন সানডের ৯.১৪ শতাংশ, ডেইলি টেলিগ্রাফের ২.৪৭ শতাংশ, দ্য সানডে টাইমসের ১.৭৭ শতাংশ, ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের ৩.১৮, দ্য অবজারভারের ৫.৯১ শতাংশ এবং ডেইলি এক্সপ্রেসের ৯.৪ শতাংশ।

ব্রিটেনের খ্যাতিমান সংবাদমাধ্যম প্রেস গেজেটের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে পত্রিকাগুলোর ছাপা সংস্করণের বিক্রির এই নিম্নমুখী চিত্র। ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রেস গেজেট দীর্ঘদিন সাময়িকী হিসেবে পাঠকের টেবিলে উঠলেও প্রযুক্তির কাছে হার মেনে এখন কেবল ডিজিটাল ডিভাইসে খবর পৌঁছাচ্ছে। অর্থাৎ এটি নিজেই ২০১০ সাল থেকে পুরোপুরি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পরিণত হয়।

প্রেস গেজেট বলছে, ২০১৬ সালের জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট) নিয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদপ্রাপ্তিতে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই মূলত ছাপা পত্রিকা পাঠক হারাতে শুরু করেছে। তখন মানুষ ওয়েবসাইটে ঢুকেই সবশেষ আপডেট জানছিল। সকাল বেলার ছাপা পত্রিকায় আগের দিনের পুরনো খবর আর কেউ পুনরাবৃত্তি করতে চাইছিল না। সে কারণে নামকরা সব সংবাদমাধ্যমও ছাপা সংস্করণ নিয়ে পড়েছে বেকায়দায়।

অবশ্য এই সময়ে ছাপা পত্রিকা বিক্রি ঊর্ধ্বমুখী ছিল কেবল দ্য টাইমসের। কিন্তু প্রেস গেজেটের তথ্য, এই ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে বিমানবন্দর ও অভিজাত হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে তাদের ফ্রি বিলি হওয়া পত্রিকার সংখ্যা মিলিয়ে।  

দ্য টাইমসের এই কৌশলে এখন কৌতূহল জাগতেই পারে, তবে কি অন্য পত্রিকাগুলোও ফ্রি বিলি করে পত্রিকার চল ঊর্ধ্বমুখী দেখাবে?

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।