ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিহারে মহাজোটে ফাটল, মুখ্যমন্ত্রী নীতিশের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
বিহারে মহাজোটে ফাটল, মুখ্যমন্ত্রী নীতিশের পদত্যাগ এই গলাগলি আর থাকছে না লালু প্রসাদ যাদব ও নীতিশ কুমারের মধ্যে

বিহারের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ক’দিন ধরে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল, তা-ই বাস্তব হলো। ফাটল দেখা দিয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন মহাজোট ‘জনতা পরিবারে’ । যার জের ধরে পদত্যাগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। তার পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়ে আবার টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দুর্নীতে অভিযুক্ত উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবকে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার পদত্যাগের আহ্বান জানানোর পরই দেখা দেওয়া জোটের টানাপোড়েনের পরিণতি হলো সরকারপ্রধানের বুধবারের (২৬ জুলাই) পদত্যাগ।

তেজস্বী ‘জনতা পরিবারে’র অন্যতম প্রধান অংশীদার রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে।

আর জোটের প্রধান হলেন জনতা দল (সংঘবদ্ধ) এর নেতা নীতিশ। তেজস্বীকে দুর্নীতির অভিযোগ খণ্ডাতে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ নির্দেশ দেওয়ার পর তার সমালোচনায় মুখর হন লালু। এই অবস্থায় নিজের ভাবমূর্তি ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বসলেন নীতিশ।

রেলওয়েতে টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি নাম জড়ায় লালুপ্রসাদ, তার স্ত্রী সাবেক মুক্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী, ছেলে উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ও মেয়ে মিশা ভারতীর। তাদের নাম উচ্চারিত হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদির বিজেপিসহ নানা দিক থেকে নীতিশকে চাপ দেওয়া হতে থাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য। এই প্রেক্ষিতে নীতিশ উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীর কাছে ব্যাখ্যা চাইলেই জোটে টানাপোড়েন শুরু হয়। সেই জল আরও ঘোলা হয় রাষ্ট্রপতি পদে রামনাথ কোবিন্দকে সমর্থন দেওয়া না দেওয়া নিয়ে। নীতিশের দল জোট সঙ্গী লালু পরিবারকে ডিঙিয়ে অবস্থান নেয় বিজেপির প্রার্থীর পক্ষে। এতে দু’পক্ষের দূরত্ব আরও বাড়ে।

সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, লালু পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির নেতারা ‘তুলনামূলক সমমনা’ নীতিশ কুমারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থা নিতে আহ্বান জানাতে থাকেন। যদিও তারা জোটে ফাটল ধরানোর ইচ্ছে নেই বলে দাবি করেন। তবে বুধবার নীতিশের পদত্যাগের পরই তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এতে তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যোগদানে নীতিশ কুমারকে অনেক অভিনন্দন। কোটি মানুষ এখন তার এই সততাকে সমর্থন করছে।

পদত্যগের পর ব্রিফিংয়ে নীতিশ জোটের শরীক লালু পরিবারের দিকে আঙ্গুল তুলে বলেন, এমন পরিবেশে কাজ করা সম্ভব না। আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। কিন্তু জোট বাঁচাতে আমি গত ১৫ দিন ধরে সংগ্রাম করেছি।

তার পদত্যাগে হতাশা প্রকাশ করেছে ক্ষমতাসীন জোটের অংশীদার কংগ্রেসও। যদিও পদত্যাগের আগে লালুর দল এবং কংগ্রেস নেতৃত্বকেও অবগত করেন নীতিশ।

নীতিশের বিদায়ের পর লালুপ্রসাদ পাটনায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেছেন, নীতিশকে আমিই মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছি। এখন তার বিদায়ে জোটের সর্ববৃহৎ দল হিসেবে রাষ্ট্রীয় জনতা দলই সরকার চালাবে এবং নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।  

লালু পরিবারের সঙ্গে সরকারের পরবর্তী মেয়াদ চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রণদীপ সূর্যেবালা বলেছেন, জনগণ যে ৫ বছরের জন্য সরকার চালানোর ‘ম্যান্ডেট’ দিয়েছে, সে দায়িত্ব তারা চালিয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।