মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ঘোষিত মন্ত্রিসভায় কোনো নারী না রাখায় সমালোচনা শুরু হলে বুধবার (৯ আগস্ট) প্রেসিডেন্ট এই নিয়োগের আদেশ জারি করেন। গত মে মাসে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পর মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা গঠন করেন উদারপন্থি মডারেশন ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতা রুহানি।
১২ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত তিন নারী হলেন মাসুমেহ এবতেকার, লায়া জোনেইদি ও শাহিনদখত মৌলাভের্দি। এদের মধ্যে মাসুমেহ সামলাবেন পরিবার ও নারীকল্যাণ দফতর, লায়া আইন বিষয়ক দফতর এবং শাহিনদখত সামলাবেন নাগরিক অধিকার দফতর।
তিনজনের মধ্যে মাসুমেহই আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত রাজনীতিক। ১৯৭৯ সালের ইরান-বিপ্লব পরবর্তী মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের সময় সৃষ্ট জিম্মি সংকটে মাসুমেহ আন্দোলনকারীদের মুখপাত্রের ভূমিকায় ছিলেন। তিনি রুহানির আগের সরকারে পরিবেশ দফতরের দায়িত্ব পালন করেন।
সাধারণত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর অনুমোদন নিয়েই প্রেসিডেন্ট তার অধ্যাদেশ জারি ও নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে থাকেন। সে হিসেবে এই তিন নারী ভাইস প্রেসিডেন্টও খামেনীর অনুমোদনে নিয়োগ পাওয়ায় সংসদে তাদের চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য তিন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন রুহানির আগের সরকারেও। দ্বিতীয় দফার সরকারে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা গঠন হলেও এখানে আরও কিছু ডেপুটি পর্যায়ের পদ খালি আছে। তিন নারীকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আনার পর রুহানি আরও কোনো নারীকে রাজনীতিতে আনবেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।
উদারপন্থি মডারেশন ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট রুহানি মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা ঘোষণা করলে তার মিত্র দলগুলোর নেতারা শুরু করেন তুমুল সমালোচনা। সমালোচকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, মুখে সংস্কারের কথা বললেও প্রেসিডেন্ট ধর্মীয় প্রাতিষ্ঠানিকতার কাছে হার মেনেছেন, যে কারণে তার সরকারে নারীদের জায়গা হয়নি।
পশ্চিমাবিরোধী মাহমুদ আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জিতে ২০১৩ সালের আগস্টে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়া রুহানি গত মে মাসের নির্বাচনেও জিতে যান কট্টরপন্থি এব্রাহিম রাইসিকে হারিয়ে। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার পাশাপাশি নাগরিক স্বাধীনতা ও নারীদের নেতৃত্বে নিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর ইরানে এখন পর্যন্ত কেবল একজন নারীই মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। মারজিয়াহ দাস্তজের্দি নামে ওই নারী রাজনীতিক আহমাদিনেজাদের শেষ আমল ২০০৯-২০১৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৭
এইচএ/