শুক্রবার (১১ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সীমান্তে দেশটির আরও সৈন্য-সামন্ত পাঠানোর খবর দিয়ে জানায়, এটিকে অপারেশনাল রেডিনেস বা ব্যবস্থাগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তবে ঠিক কতোসংখ্যক সেনা পাঠানো হয়েছে সেটা বলা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করছেন না। তবে নয়াদিল্লির কর্মকর্তারা বলছেন, কূটনৈতিক উপায়ে সংকটের সমাধান খোঁজার পাশাপাশি ‘আত্ম-প্রতিরক্ষায়’ এই সেনা-সরঞ্জাম সীমান্তে রাখা হয়েছে।
ওদিকে চীনও সীমান্তে তাদের সেনা জড়ো করেছে বলে জানাচ্ছে বেইজিংয়ের সংবাদমাধ্যম। তবে সেখানকার প্রস্তুতি সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু বলছে না সেনাবাহিনী।
ভারত, ভুটান ও চীনের সীমান্তের সংযোগস্থল ডোকলাম নিয়ে গত তিনমাস ধরে এশিয়ার দুই পরাশক্তি কেন্দ্র নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলে আসছে।
হিমালয় ঘেঁষা ডোকলাম মালভূমি ভুটানের বলে নয়াদিল্লি ও থিম্পু মনে করলেও বেইজিং মনে করে চীনের। সেই মালভূমি ঘেঁষে চীনের সেনাবাহিনীর সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করেই জুনের শুরু থেকে মুখোমুখি অবস্থানে দু’পক্ষ। ওই সড়ক নির্মাণে ভারতীয় বাহিনী বাধা দেওয়ায় পাল্টা তাদের দু’টো বাংকার গুড়িয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করেই মূলত উত্তেজনা ছড়ায়।
এরপর ইউরোপে ব্রিকস সম্মেলনে দুই দেশের নেতা নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিংয়ের আলাপ হলেও উত্তেজনা থামেনি। এমনকি ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সম্প্রতি বেইজিংয়ে একটি সম্মেলনে যোগদানের ফাঁকে চীনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করে সংকট সমাধানের ইঙ্গিত দিলেও বরফ গলছে না।
নয়াদিল্লি ও সিকিমের দু’টি সূত্র একটি সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ১ সেপ্টেম্বর চীনা সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসকে সামনে রেখে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে ধারাবাহিক উস্কানিমূলক সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তা বোঝা যাচ্ছে না। সেজন্য সীমান্তে দায়িত্বরত সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘সতর্কতার মাত্রা’ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লি বলছে, সীমান্ত থেকে দু’পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহার করে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানের আহ্বান জানানো হলেও চীন একরোখা ভাব নিয়ে বলছে, ডোকলামের নিজেদের অংশের এতটুকুনও ছাড় তারা দেবে না। এই ছাড় না দেওয়ার মানসিকতাই দু’পক্ষকে করে ফেলছে আরও মুখোমুখি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এইচএ/