ভারতের স্বাধীনতা দিবস মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য কাশ্মীরের হিমালয়ঘেঁষা অঞ্চল লাদাখের প্যানগং হ্রদের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বুধবার (১৬ আগস্ট) বিষয়টি নয়াদিল্লিকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম জানালেও বেইজিংয়ের সংবাদমাধ্যম বলছে, তাদের চীনা সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে অবগত নয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রায় সাড়ে ৪শ’ বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্যানগং হ্রদটির দুই-তৃতীয়াংশই চীনের নিয়ন্ত্রণাধীন। এটি চীনের তিব্বত থেকে ভারতের লাদাখ পর্যন্ত বিস্তৃত। এই হ্রদের তীর ধরে মঙ্গলবার সকালে ১৫ চীনা সৈন্য ভারতের ওই চারণভূমিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেয় এ পাশের সৈন্যরা। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং এক পর্যায়ে দু’পক্ষ পাথর ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হয়। প্রায় দু’ঘণ্টার এ পাথর ছোড়াছুড়িতে সামান্য আহত হন কয়েকজন। পরে চীনা সৈন্যরা ফিরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিম সীমান্তে চীনের সড়ক নির্মাণকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েকমাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করলেও এ ধরনের ঘটনা কয়েক বছরেও দেখা যায়নি। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এতো বেড়েছে যে, মঙ্গলবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসে রেওয়াজ অনুযায়ী নির্ধারিত সভায়ও যোগ দেয়নি চীনের সেনা কর্তৃপক্ষ। যদিও সিকিমের অদূরে ডোকলাম মালভূমি ঘেঁষে সড়ক নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা হলেও সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মিষ্টি বিতরণ করেছে দু’পক্ষ।
ভারত, ভুটান ও চীন সীমান্তের সংযোগস্থলে অবস্থিত হিমালয়ঘেঁষা ডোকলাম মালভূমি বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনার কেন্দ্র ছিল। এই মালভূমিটি ভুটানের বলে নয়াদিল্লি ও থিম্পু মনে করলেও বেইজিং মনে করে চীনের। কয়েকমাস আগেই ডোকলামের পাশ ঘেঁষে চীনা সেনাবাহিনী সড়ক তৈরি করতে গেলে তাতে বাধা দেয় ভারতের সেনারা। এ নিয়ে উত্তেজনায় ভারতের দু’টি বাংকার গুড়িয়ে দেয় চীনারা।
এরপর উত্তেজনা এতোই বাড়ে যে, দু’পক্ষই বাকযুদ্ধে জড়ানোর পাশাপাশি উভয় সীমান্তে ব্যাপক সৈন্য-সামন্ত জড়ো করে। এমনকি ভারত তাদের বিমান বাহিনীতে ‘অপারেশনাল অ্যালার্ট’ বা সর্বোচ্চ প্রস্তুতির বার্তা দেয় বলেও জানা যায়। এই উত্তেজনা-বাকযুদ্ধের মধ্যেই মঙ্গলবারের ঘটনাটি ঘটলো। বুধবার এ নিয়ে দু’পক্ষের সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা ডাকা হয়েছে বলে জানাচ্ছে নয়াদিল্লির সংবাদমাধ্যম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
এইচএ